বাণিজ্য ডেস্ক: করোনাভাইরাসের ব্যপক সংক্রমণের কারণে বন্ধ থাকা সাংহাইয়ের বিভিন্ন শপিং মল ও সেলুনসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো আজ থেকে খুলতে যাচ্ছে। প্রায় কয়েক সপ্তাহের লকডাউন শেষে চীনের বাণিজ্য নগরীতে স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরুর আভাস পাওয়া যাচ্ছে। তবে রাজধানী বেইজিংয়ে করোনার নতুন সংক্রমণ শঙ্কার কারণ হয়ে উঠেছে। খবর রয়টার্স।
করোনার নতুন ঢেউয়ে গত ছয় সপ্তাহরও বেশি সময় ধরে আংশিক বা সম্পূর্ণ লকডাউনের মধ্যে ছিল সাংহাই। দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে করোনায় বিপর্যস্ত বাসিন্দাদের জন্য নেতিবাচক খবর হিসেবে আবির্ভূত হয় সর্বশেষ ওই লকডাউন। বিভিন্ন শিল্প-কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য তাদের কারখানা বন্ধ করতে বাধ্য হয়। এতে প্রভাব পড়ে বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনে।
গতকাল এক সংবাদ বিবৃতিতে সাংহাইয়ের ডেপুটি মেয়র চেন তং বলেন, সোমবার থেকে শপিং মল, ডিপার্টমেন্ট স্টোর ও সুপারমার্কেট চালু হতে যাচ্ছে। তবে গ্রাহকদের করোনাবিধি মেনে শৃঙ্খলার সঙ্গে কেনাকাটার অনুরোধ করা যাচ্ছে। চুল কাটার সেলুন ও সবজি বাজারও সীমিত পরিসরে খুলবে বলে জানান তিনি।
কীভাবে এবং কোন ধাপে কোন প্রতিষ্ঠান খুলবে— এ নিয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রকাশ করেননি সাংহাইয়ের ডেপুটি মেয়র। সাংহাইয়ের অনেক বাসিন্দার নতুন নীতিমালা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
চীনভিত্তিক সোশ্যাল সাইট উইবোতে এক ব্যবহারকারী লেখেন, আপনারা কার সঙ্গে মিথ্যা বলছেন? আমরা আমাদের কম্পাউন্ড ছেড়েও যেতে পারছি না। আপনারা ইচ্ছামতো সব চালু করতে পারেন। আমরা কেউই সেখানে যাব না।
সাংহাই লকডাউনের সময় জরুরি প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী ক্রয় করতে পারত বাসিন্দারা। কুরিয়ার স্বল্পতার কারণে অনলাইন প্লাটফর্মে স্বাভাবিক কেনাকাটা বন্ধ ছিল।
শুরু থেকেই করোনা নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থার পক্ষে চীন। সাংহাইয়ে সর্বশেষ লকডাউনেও ‘জিরো কভিড নীতি’ অনুসরণ করে তারা। সংক্রমণ এড়াতে বাণিজ্য নগরীটিতে কঠোর লকডাউন ও করোনা নীতিমালা ঘোষণা করে চীন সরকার। এতে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে বিপর্যয় নেমে আসে, যার প্রভাব পড়ে আঞ্চলিক ও বিশ্ব অর্থনীতিতে।
গত শুক্রবার প্রকাশিত চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উপাত্তে দেখা গেছে, এপ্রিলে চীনের নতুন ব্যাংকঋণের পরিমাণ সাড়ে চার বছরের সর্বনিম্নে দাঁড়িয়েছে। এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন শনিবার জানায়, কভিড সংকটের কারণে ২০২৩ সালের এশিয়া কাপ আয়োজন বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে তারা। এর আগেও বেশ কয়েকটি ক্রীড়া অনুষ্ঠান বাতিলে বাধ্য হয়েছে তারা।
এশিয়া কাপ বাতিলের সিদ্ধান্তে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, চীনের জিরো কভিড নীতি আগামী বছরেও বহাল থাকবে। তবে চীনের এ নীতিকে টেকসই মনে করেন না বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান।
গত শনিবার সাংহাইয়ে দৈনিক করোনা সংক্রমণ ১ হাজার ৩৬৯ জনে দাঁড়িয়েছে। এর আগের দিন যেখানে সংক্রমণ দাঁড়িয়েছিল ১ হাজার ৬৮১।
সাংহাইয়ে ধীরে ধীরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান চালু হলেও ভিন্ন চিত্র রাজধানী বেইজিংয়ের। সেখানে রেস্টুরেন্টে আহার গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে এবং বাসিন্দাদের ঘরে অবস্থান ও হোম অফিসের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পার্ক ও অন্যান্য বিনোদন কেন্দ্রও বন্ধ করা হয়েছে। চীনের বসন্তকালের সুন্দর আবহাওয়ায় ঘরে কাটাতে হচ্ছে বাসিন্দাদের।