শিরোনাম :
কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গভীর খাদে যাত্রীবাহী ট্যাক্সি, নিহত ১০ একটা পণ্য বর্জন করলেই জাতি মুক্ত হ‌বে: গয়েশ্বর শিক্ষক বলেছিলেন ‘ইউ আর নট ফিট ফর ঢাবি’, সেই অথৈ সি ইউনিটে প্রথম মেট্রোরেলের ওপর দিয়ে যাওয়া ইন্টারনেট-ডিসের তার অপসারণের নির্দেশ ‘জুনের মধ্যে ১০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ’ কারাবন্দী বাংলাদেশের পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র পায়ুপথে ৭০ লাখ টাকার সোনা! ‘মুক্তিপণের বিষয়ে এখনো কথা হয়নি’ টানা তিন দিন বিছানায়, ব্যথা নাশক ওষুধ খেয়ে মাঠে নেমেই ম্যাচসেরা সিরিয়ার আলেপ্পোতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৩৮ মস্কো হামলার ঘটনায় এখনও নিখোঁজ ১৪৩ বিএনপির নিগৃহীত নেতাকর্মীদের তালিকা দিতে হবে: ওবায়দুল কাদের ৯ মাসেই ১০ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক অকালমৃত্যুর ৫৩ শতাংশই দূষণে ভিকারুননিসায় আরও ৩৬ ছাত্রীর ভর্তি জালিয়াতির তথ্য ফাঁস

প্লাস্টিক বিক্রি করে মাসে লাখ টাকা আয় ফরিদুলের

  • মঙ্গলবার, ৩ জানুয়ারী, ২০২৩

শেরপুর: শেরপুরের নকলা উপজেলার পৌরশহরের গড়েরগাও এলাকার বাসিন্দা ফরিদুল ইসলাম। ১৯৮৫ সালে ঢাকার ইসলামাবাগে একটি প্লাস্টিকের কারখানায় চাকরি করতেন তিনি। এরপর ঢাকার অভিজ্ঞতা নিয়ে ২০০৬ সালে ফিরে আসেন নিজ জেলায়। সেখানেই অল্প পুঁজি নিয়ে শুরু করেন ব্যবসা। গড়ে তুলেন নিয়ামুল সোহান প্লাস্টিক কোম্পানি নামে একটি কারখানা।

১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে কিনে আনেন প্লাস্টিক বোতল স্ক্র্যাপ করার মেশিন। তিনি ফেলে দেওয়া বিভিন্ন প্লাস্টিকের আসবাবপত্রের টুকরা, কোমল পানীয় ও সয়াবিনের বোতল জেলার নালিতাবাড়ী, নকলা, চন্দ্রকোনাসহ আশপাশের এলাকা থেকে সংগ্রহ করে থাকেন। এসব প্লাস্টিক পণ্য সংগ্রহ করতে ফরিদুল ইসলামকে সহযোগিতা করেন কয়েকজন যুবক। যাদেরকে তিনি দৈনিক ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা মজুরি দেন। শ্রমিকেরা জেলার বিভিন্নস্থান থেকে ছোট কোমল পানীয়ের বোতল প্লাস্টিকের বিভিন্ন টুকরো (ভাঙা চেয়ার টেবিল বা আসবাবপত্র) নামমাত্র মূল্যে ক্রয় করে থাকেন।

এরপর কারখানায় সেসব প্লাস্টিকের পণ্যগুলোকে রং অনুযায়ী আলাদা করা হয়। আলাদা করার পর প্লাস্টিকের ভাঙা অংশগুলো স্ক্র্যাপ করার মেশিনে দিয়ে টুকরা করা হয়। টুকরা করার পর পুনরায় সেগুলোকে রং করা হয়। এরপর ২ থেকে ৩ দিন প্লাস্টিকের টুকরাগুলোকে প্রখর রোদে শুকিয়ে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়।

জানা যায়, ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকের ক্রয়ের মতো বিক্রিরও ভিন্নতা রয়েছে। ছোট কোমল পানীয়ের স্ক্র্যাপ করা টুকরা ১৫-২০ টাকা, বড় টুকরা ৩০-৪০ টাকা এবং প্লাস্টিকের বিভিন্ন টুকরো (ভাঙা চেয়ার টেবিল বা আসবাবপত্রের) ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়। প্রসেসিংয়ের পর প্লাস্টিকের স্ক্র্যাপ করা টুকরাগুলো পার্শ্ববর্তী জেলা জামালপুর, ময়মসমনসিংহ ও ঢাকাতে বিক্রি হয়। এছাড়া বোতলজাত কোমল পানীয় ও ভোজ্যতেলের স্ক্র্যাপ করা টুকরো রপ্তানি হয় চীনসহ বিভিন্ন দেশে। এই কারখানায় ২০ জন নারী-পুরুষ নিয়মিত কর্মচারী কাজ করায় তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।

কোম্পানির মালিক ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ঢাকার ইসলামাবাগে একটি প্লাস্টিকের কারখানায় চাকরি করতাম। আমি সেখান থেকে এই অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। পরে চিন্তা করি আমার নিজ জেলাতে প্লাস্টিকের ফলে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। তাই শেরপুরের নকলায় আমার বাড়ির পাশে ঢাকার ইসলামাবাগ থেকে মেশিন ক্রয় করে কারখানা শুরু করি। প্রতি মাসে আমার কারখানায় ১০ থেকে ১৫ টন স্ক্র্যাপ করা প্লাস্টিক টুকরো তৈরি হয়। প্রত্যেক মাসে ১ থেকে দেড় লাখ টাকার মতো ইনকাম হয়।’

ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘নির্দিষ্ট কোনো কর্ম ছিল না। যখন যেটা পেতাম সেটাই করতাম। এখন দীর্ঘদিন থেকে এই প্লাস্টিক ভাঙার কাজ করছি। এখানে আমাদের মোট ২০ জন শ্রমিকের ভালো বেতনে নিয়মিত কাজের সুযোগ হয়েছে।’

শ্রমিক লতিফ মিয়া বলেন, ‘আমি কিছুদিন গাড়ি চালিয়েছি পরের কিছুদিন কাঠমিস্ত্রীর কাজও করেছি। কিন্তু তেমন কাজ না থাকায় ভাঙারির কাজ করি। এই জায়গা থেকে যা পাই তা দিয়ে সংসার চলে।’

প্রতিষ্ঠান দেখতে আসা দর্শনার্থী রাসেল মিয়া বলেন, ‘ফরিদুল প্লাস্টিক গলিয়ে প্রসেসিং করে বিক্রি করে থাকেন। তিনি অল্প পুঁজিতেই লাভবান হচ্ছে। এই ব্যবসা করতে তেমন টাকা লাগে না। অল্প টাকায় ব্যবসা করে ভালো টাকা ইনকাম করা যায়। আমি দেখে গেলাম। আমার এই ব্যবসা করার ইচ্ছা আছে।’

শেরপুর বিসিক শিল্পনগরী ম্যানেজার আতাউর রহমান ফকির ব্রেকিং নিউজকে বলেন, ‘শেরপুর বিসিক কার্যালয় থেকে উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন বিষয়ে সহায়তা করা হয়। আমরা উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তে ঋণ দেই। তারা যেন ব্যবসার পরিধি বড় করে লাভবান হতে পারে। ফরিদুল ইসলামের সরকারি কোনো সাহায্যের দরকার হলে, আমরা তাকে সর্বোচ্চ সাহায্য করার চেষ্টা করব।’

সংবাটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খরব
© Copyright © 2017 - 2021 Times of Bangla, All Rights Reserved