চারিদিকে সারি সারি পাহাড়, পাহাড়ের গাঁ ঘেষেই নিশ্চিন্তে বয়ে যাচ্ছে কাঁচের মতো স্বচ্ছ পানির হ্রদ। পাহাড়ি সবুজ পেরিয়ে দেখার উপায় নেই দিগন্ত, নীল আকাশের ফাঁকে সাদা মেঘ। এ যেন সবুজের রাজ্যে সাদা মেঘের হ্রদ। এটুকু জানলেই হয়তো বুঝে যাওয়ার কথা কেনো সম্রাট জাহাঙ্গীরের কাশ্মীরের মতো চীনের এই ভ্যালিকেও বলা হয় ‘পৃথিবীর স্বর্গ’।
জিওজাইগো ভ্যালি পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু মালভূমি অঞ্চলের বিস্ময়কর এক জলের রাজ্য। এই উপত্যকার মাত্র ৫০ কিলোমিটারেই রয়েছে ১৭টি ঝর্ণা, ১১৪টি স্বচ্ছ পানির লেক এবং পাহারের গায়ে আছে সবুজের কোমলতায় ঘেরা বনাঞ্চল।
জিওজাইগো ভ্যালি পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু মালভূমি অঞ্চলে থাকা বিস্ময়কর এক জলের রাজ্য। চীনের জাতীয় পর্যটন স্থল হিসেবে জায়গাটিকে স্বীকৃতি দিয়েছে চীন সরকার। অথচ মাত্র ৪০ বছর আগেও চীন সরকারের কোনো ধারণাই ছিলো না যে জিওজাইগোতে এমন মায়াময় উপত্যকা থাকতে পারে।
পুরো পৃথিবীর কাছে এই উপত্যকা জিওজাইগো ভ্যালি নামে পরিচিতি পেলেও প্রকৃত চীনা উচ্চারণে এর নাম চিওচাইকোউ ভ্যালি।
ভ্যালির হ্রদগুলো সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে গড়ে প্রায় ১০ হাজার ফুট উঁচুতে অবস্থিত এবং এর চারপাশে রয়েছে বর্ণিল বনভূমি। হ্রদের পানি মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে গিয়েই জলপ্রপাত হয়ে নেমে গেছে প্রায় ৬ হাজার ফুট নিচে। জিওজাইগোর প্রাণ বলা হয় এই জলপ্রপাতকেই।
স্থানীয়দের কাছে জনশ্রুতি আছে, এই উপত্যকা অঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছিলো মূলত ৯ জন সুন্দরী ও সাহসী বোনের হাত ধরে। ৯ বোন এই এলাকার সৌন্দর্য্য দেখতে এসে এক বিষাক্ত সাপের আক্রমণের শিকার হয়। কিন্তু নিজেদের সাহসিকতায় তারা সাপকে মেরে ফেলে। ভ্যালির প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে স্থানীয় ৯ যুবককে বিয়ে করে এই উপত্যকা জুড়েই ছড়িয়ে থাকা ৯টি পৃথক গ্রামে বসবাস শুরু করে। সেই থেকেই উপত্যকার নাম হয়ে গেছে চিওচাইকোউ বা জিওজাইগো।