শিরোনাম :
রাজধানীতে সড়ক দুর্ঘটনায় এসবির রিপোর্টার নিহত কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গভীর খাদে যাত্রীবাহী ট্যাক্সি, নিহত ১০ একটা পণ্য বর্জন করলেই জাতি মুক্ত হ‌বে: গয়েশ্বর শিক্ষক বলেছিলেন ‘ইউ আর নট ফিট ফর ঢাবি’, সেই অথৈ সি ইউনিটে প্রথম মেট্রোরেলের ওপর দিয়ে যাওয়া ইন্টারনেট-ডিসের তার অপসারণের নির্দেশ ‘জুনের মধ্যে ১০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ’ কারাবন্দী বাংলাদেশের পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র পায়ুপথে ৭০ লাখ টাকার সোনা! ‘মুক্তিপণের বিষয়ে এখনো কথা হয়নি’ টানা তিন দিন বিছানায়, ব্যথা নাশক ওষুধ খেয়ে মাঠে নেমেই ম্যাচসেরা সিরিয়ার আলেপ্পোতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৩৮ মস্কো হামলার ঘটনায় এখনও নিখোঁজ ১৪৩ বিএনপির নিগৃহীত নেতাকর্মীদের তালিকা দিতে হবে: ওবায়দুল কাদের ৯ মাসেই ১০ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক অকালমৃত্যুর ৫৩ শতাংশই দূষণে

গাড়ি দুর্ঘটনায় নিহত অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস

  • রবিবার, ১৫ মে, ২০২২

স্পোর্টস ডেস্ক : অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট তারকা ও দুইবারের বিশ্বকাপজয়ী অলরাউন্ডার অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস দেশটির কুইন্সল্যান্ডে এক গাড়ি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। শেন ওয়ার্নের পর আরেক অস্ট্রেলিয়ান গ্রেট ক্রিকেটারের মৃত্যুতে শোকাহত পুরো ক্রিকেট বিশ্ব।

শনিবার (১৪ মে) দিনগত রাতে টাউনসভিল শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরের হার্ভে রেঞ্জে এ দুর্ঘটনা ঘটে। কুইন্সল্যান্ড পুলিশ এটি তদন্ত করছে।

পুলিশের বিবৃতি অনুযায়ী, শনিবার রাত ১১টার পর সাইমন্ডসের গাড়িটি অ্যালিস রিভার ব্রিজের কাছে হার্ভে রেঞ্জ রোডে চলার সময় হঠাৎ এটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তা থেকে নিচে গড়িয়ে পড়ে।

অস্ট্রেলিয়ার জরুরি পরিষেবাগুলো তাকে বাঁচানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিল। কিন্তু গুরুতর আঘাতের কারণে ঘটনাস্থলেই মারা যান ৪৬ বছর বয়সী এ অজি ক্রিকেটার।

এর আগে, ৫২ বছর বয়সে লেগস্পিন কিংবদন্তি শেন ওয়ার্ন ও ৭৪ বছর বয়সে উইকেটরক্ষক ব্যাটার রড মার্শ হার্ট অ্যাটাকে মারা যান। তাদের মৃত্যুর মাত্র দুই মাস পরেই সাইমন্ডসের মৃত্যুর ঘটনা ঘটলো।

সাইমন্ডসের মৃত্যুর ঘটনায় ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার চেয়ার ল্যাচলান হ্যান্ডারসন শোক জানিয়েছেন। তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট তার আরেকটি সেরা সম্পদ হারালো। অ্যান্ড্রু এ প্রজন্মের সেরা এক প্রতিভা ছিলেন, যিনি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার সাফল্য ও কুইন্সল্যান্ড ক্রিকেটকে সমৃদ্ধ করার মাধ্যমে ইতিহাস হয়ে থাকবেন৷

‘অ্যান্ড্রু অনেকের কাছেই এক অনুপ্রেরণার নাম ছিলেন। অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটের পক্ষ থেকে অ্যান্ড্রুর পরিবার, সতীর্থ ও বন্ধুদের প্রতি গভীর সহানুভূতি প্রকাশ করছি আমরা।’

সাইমন্ডস অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ২৬টি টেস্ট খেলে ৪০ দশমিক ৬১ গড়ে এক হাজার ৪৬২ রান করেছেন। এছাড় অফ স্পিন ও মিডিয়াম পেস বোলিং করে ২৪ উইকেট শিকার করেন তিনি।

২০০৮ সালের সিডনি টেস্টে ভারতের বিপক্ষে তার দুর্দান্ত ১৬২ রানের অপরাজিত ইনিংস অস্ট্রেলিয়াকে ১২২ রানের বড় জয় এনে দেয়। এ ম্যাচটিই পরে মাঙ্কিগেট কাণ্ড নিয়ে বিতর্কিত খেলায় রূপ নেয়।

ম্যাচ শেষে সাইমন্ডস অভিযোগ করেন, খেলা চলাকালীন ভারতীয় স্পিনার হরভজন সিং তাকে ‘বানর’ বলে সম্বোধন করেছেন। পরে এর জন্য হরভজনকে প্রাথমিকভাবে তিন ম্যাচের জন্য বরখাস্ত কর হয়। কিন্তু ভারতীয় দল সেই শাস্তি না মেনে সিরিজ শেষ না করেই দেশে ফিরে যাওয়ার হুমকি দেয়।

ক্রিকেটের শর্ট-ফর্মের (টি২০) খেলায় দর্শকপ্রিয় ও বিগ-হিটিং এ অলরাউন্ডার অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ১৯৮টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। সেখানে পাঁচ হাজার ৮৮ রানের পাশাপাশি ১৩৩ উইকেট নিয়েছেন তিনি।

অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস একজন দুর্দান্ত ফিল্ডারও ছিলেন। দলের প্রয়োজনে তিনি দর্শনীয় সব রান আউট ও দারুণ ক্যাচ ধরার জন্য বিখ্যাত ছিলেন।

২০০৩ ও ২০০৭ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়া দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন সাইমন্ডস। ব্যাট, বল ও ফিল্ডিংয়ে দারুণ পারফর্ম করে দলকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন তিনি।

২০০৩ সালের বিশ্বকাপ টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে জোহানেসবার্গে ওয়াসিম আকরামের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৪৩ রান ক্রিকেট বিশ্বে তার আগমনের ঘোষণা দেয়।

ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ম্যাচজয়ী সেই ইনিংসটি খেলতে মাত্র ১২৫ বল ব্যয় করেছেন, যেখানে ১৮টি চার ও দুটি ছক্কার মার ছিল। তখন পর্যন্ত এটিই ছিল বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ স্কোর।

এরপর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেমিফাইনালে সাইমন্ডস যখন ক্রিজে আসেন, তখন তার দল ৫৩ রানেই তিন উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল। তার অপরাজিত ৯১ রানের ওপর ভর করে অস্ট্রেলিয়া সাত উইকেটে ২১২ রান করে। আর বৃষ্টি-বিঘ্নিত সেই ম্যাচে এ রান তাড়া করা শ্রীলঙ্কানদের জন্য অনেক বেশি কঠিন ছিল।

এরপর ২০০৩ বিশ্বকাপ টুর্নামেন্টের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে সহজ জয় পায় রিকি পন্টিংয়ের দল।

২০০৭ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া দলে সাইমন্ডসের খুব বেশি বীরত্ব দেখানোর প্রয়োজন হয় নি। বার্বাডোসের ব্রিজটাউনে অনুষ্ঠিত ফাইনাল ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে সহজেই পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয় অস্ট্রেলিয়া।

সাইমন্ডস ৯৩ দশমিক ২৯ স্ট্রাইক রেটে গড়ে ১০৩ রান করে দুটি পদক জয়সহ বিশ্বজুড়ে ভক্তদের প্রশংসার মধ্য দিয়ে তার জোড়া বিশ্বকাপ অভিযান শেষ করেছিলেন।

সাইমন্ডস সম্পর্কে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক ইয়ান চ্যাপেল বলেন, আমি মনে করি প্রতিপক্ষের জন্য সাইমন্ডস একটি ভয়ের কারণ ছিল। কারণ সে নিয়মিত বাউন্ডারি (চার-ছক্কা) মারতো। এছাড়া সে দলের হয়ে কিছু রান আউট করতো অথবা দারুণ সব ক্যাচ ধরতো।

সাম্প্রতিক সময়ে সাইমন্ডস ফক্স স্পোর্টসের জন্য টিভি ধারাভাষ্যকার হিসেবে কাজ করেছিলেন এবং বিগ ব্যাশ লিগের মাইক্রোফোনে তাকে নিয়মিত দেখা যেতো।

সূত্র: ইএসপিএন

সংবাটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খরব
© Copyright © 2017 - 2021 Times of Bangla, All Rights Reserved