শিরোনাম :
মেহেদির রং শুকানোর আগে প্রাণ গেল তরুণের ঘরের কাজে ব্যস্ত মা, পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্যের ডাক বিশ্বে প্রতিদিন ১০০ কোটি টন খাবার নষ্ট হয় : জাতিসংঘ ভোট ডাকাত সরকারকে প্রকাশ্যে সমর্থনকারী দেশের পণ্য বর্জন ন্যায় সঙ্গত: রিজভী চার বছরে মাধ্যমিকে ১০ লাখ শিক্ষার্থী কমেছে ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে শুক্রবার আরও কমলো রিজার্ভ ঢাবির বিজ্ঞান ইউনিটে পাসের হার ৮.৮৯ শতাংশ গণতন্ত্রের আন্দোলন ন্যায়সঙ্গত, আন্দোলনে আমরা বিজয়ী হবো: ফখরুল একনেকে ১১ প্রকল্প অনুমোদন একদিন পর বাংলাদেশি যুবকের লাশ ফেরত দিল বিএসএফ ত্রিশালে বাসচাপায় অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত গাজার বর্বরতাকে ইসরায়েলি ‘গণহত্যা’ বলায় জাতিসংঘের দূতকে হুমকি শহরের চেয়ে গ্রামে বিয়ে-তালাক বেশি

‘অভ্যুত্থান’ গুজব উড়িয়ে প্রকাশ্যে শি জিনপিং

  • বুধবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ‘সামরিক অভ্যুত্থানের’ পর চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে গৃহবন্দী করা হয়েছে বলে সম্প্রতি একটি খবর ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এই জল্পনায় হাওয়া লাগায় চীনে – বিশেষ করে বেইজিংয়ে – হাজারও ফ্লাইট বাতিলের আরেক অপ্রমাণিত খবর সামনে আসায়।

তবে সেসব খবরকে গুজব হিসেবে প্রমাণ করে প্রকাশ্যে এসেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে একটি প্রদর্শনী অনুষ্ঠান পরিদর্শন করেছেন তিনি। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং মঙ্গলবার বেইজিংয়ে একটি প্রদর্শনী অনুষ্ঠান পরিদর্শন করেন। চলতি সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে মধ্য এশিয়ায় সরকারি সফর থেকে চীনে ফিরে আসার পর এই প্রথম জনসাধারণের সামনে উপস্থিত হলেন তিনি। আর এতেই জিনপিং যে গৃহবন্দী ছিলেন এমন গুজব কার্যত উড়ে গেছে।

সম্প্রতি ইন্টারনেটজুড়ে একটি গুজব ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। অপ্রমাণিত সেই গুজবে দাবি করা হয়, চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে নাকি গৃহবন্দী করা হয়েছে। চীনা অনেক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী দাবি করেছিলেন, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতারা পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) প্রধানের পদ থেকে শি জিনপিংকে সরিয়ে দেওয়ার পর তাকে গৃহবন্দী করা হয়।

এমনকি দেশটির রাজধানী বেইজিংও নাকি সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে অনেক চীনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী দাবি করেছিলেন। নিউজ হাইল্যান্ড ভিশন নামের একটি সংবাদমাধ্যমের খবরে দাবি করা হয়, চীনের সাবেক প্রেসিডেন্ট হু জিনাতাও, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাও চীনা কমিউনিস্ট পার্টির স্টান্ডিং কমিটির সাবেক সদস্য সং পিংকে প্ররোচনা দিয়েছেন এবং তিনি দেশটির সেন্ট্রাল গার্ড ব্যুরোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন।

এছাড়া বেইজিংয়ে সামরিক অভ্যুত্থানের অপ্রমাণিত এই জল্পনায় হাওয়া লাগে যখন মধ্য এশিয়ার উজবেকিস্তানে একটি শীর্ষ সম্মেলন থেকে চীনে ফিরে আসার পর থেকে শি জিনপিং জনসাধারণের দৃষ্টি থেকে অনুপস্থিত ছিলেন। তবে মঙ্গলবার সেগুলো কার্যত গুজব বলে প্রমাণিত হয়।

আলজাজিরা বলছে, মৃতপ্রায় অর্থনীতি, কোভিড-১৯ মহামারি এবং বিরল জনবিক্ষোভের পাশাপাশি পশ্চিমাদের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান দ্বন্দ্ব এবং তাইওয়ান নিয়ে উত্তেজনা সত্ত্বেও শি জিনপিং তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসার স্বপ্ন দেখছেন। এক দশক আগে দলের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর থেকে শি ধীরে ধীরে ক্ষমতাকে দৃঢ় করেছেন এবং ভিন্নমত ও বিরোধীদের দমন করেছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী মার্কিন নেতৃত্বাধীন এই বিশ্ব ব্যবস্থায় বিকল্প নেতা হিসেবে চীন বৈশ্বিক মঞ্চে অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।

চীনে কোনো ব্যক্তি আগে সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্ট পদে দায়িত্বপালন করতে পারতেন। তবে ২০১৮ সালে সেই নিয়ম বাতিল করা হয়। আর এতেই ৬৯ বছর বয়সী শি জিনপিংয়ের তৃতীয় মেয়াদে আরও পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতায় আরোহণের সম্ভাবনা বেশ প্রবল।

ক্ষমতায় আসার পর গত এক দশক-ব্যাপী শাসনে দলের মধ্যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন চালাতে দেখা গেছে শি জিনপিংকে। যদিও পর্যবেক্ষকরা বলেছেন, দুর্নীতি দমনের নামে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের ক্ষমতাচ্যুত করতে কাজ করেছে চীনা প্রশাসন। একইসঙ্গে হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকে দমন করার জন্য একাধিক পদক্ষেপও নিয়েছে বেইজিং।

এছাড়া চীনের উত্তর-পশ্চিম জিনজিয়াং অঞ্চলে নিপীড়ন-মূলক নীতির জন্য মানবাধিকার ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কঠোর সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। চীনের এই অঞ্চলে আনুমানিক ১০ লাখ উইঘুর এবং অন্যান্য মুসলিম সংখ্যালঘুকে ‘সন্ত্রাসবাদে’ জড়িত থাকার অভিযোগে ব্যাপক ক্র্যাকডাউন চালিয়ে আটক করা হয়েছে।

প্রতি পাঁচ বছরের মধ্যে একবার চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিসিপি) সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। আগামী ১৬ অক্টোবর এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে এবং সেসময় শি তার তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসাবে ক্ষমতায় থাকা নিশ্চিত করবেন বলে ব্যাপকভাবে আশা করা হচ্ছে।

তবে এর আগেই চীনের সিনিয়র অনেক কর্মকর্তাকে দমন করে কার্যত বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক চীনা জননিরাপত্তা মন্ত্রী সান লিজুন, সাবেক বিচারমন্ত্রী ফু জেংহুয়া এবং সাংহাই, চংকিং ও শানজির সাবেক পুলিশ প্রধানদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এটিকে গত কয়েক বছরের মধ্যে চীনের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক শুদ্ধি অভিযান বলেও সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে।

গত রোববার চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির ২ হাজার ৩০০ জন প্রতিনিধির একটি তালিকা ঘোষণা করেছে। তালিকায় শি জিনপিংয়ের নামটি বেইজিংয়ে সামরিক অভ্যুত্থান নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার গুজবকে আরও উড়িয়ে দিয়েছে।

সংবাটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খরব
© Copyright © 2017 - 2021 Times of Bangla, All Rights Reserved