ঢাকা : বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য বিশ্বের কাছে আমাদের দুঃখের কথা তুলে ধরতে হবে। বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো যদি পাঁচ বছর রোহিঙ্গাদের লালন করতে না হতো। দেশের উন্নয়নের স্বার্থে চেষ্টা করতে হবে বাংলাদেশ থেকে কীভাবে রোহিঙ্গাদের বাইরে পাঠানো যায়।
বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে বাংলাদেশ শান্তি পরিষদ আয়োজিত বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা এবং রোহিঙ্গাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলে বলেন।
নিজামুল হক নাসিম বলেন, রোহিঙ্গাদের আমরা জায়গা দিয়েছি কিন্তু এখন মনে হচ্ছে তারা আমাদের ঘাড়ের ওপর চেপে বসেছে। তারা এখন সমস্যা সৃষ্টি করছে। রোহিঙ্গারা আমাদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সমস্যা তৈরি করছে।
তিনি বলেন, মিয়ানমার ইস্যুতে আমাদের বন্ধু ভারত ও রাশিয়া আমাদের পক্ষে নেই। আমাদের বন্ধুরা পাশে নেই। তাহলে কি আমরা ভুল করেছি, এটা মনে আসা স্বাভাবিক। কিন্তু অন্ততপক্ষে মিয়ানমার ইস্যুতে বাংলাদেশ কোনো ভুল করেনি। অসহায় মানুষকে বাসস্থান দিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ।
প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বলেন, রোহিঙ্গাদের মধ্যে যে মৌলবাদ রয়েছে, তাদের মৌলবাদে আমাদের দেশের মৌলবাদীরা উৎসাহিত হয় কি না সেটি নিয়ে ভয় আছে। এমন হলে মারাত্মক ক্ষতি হবে আমাদের। তাই আমাদের আরও কঠোর হওয়া দরকার আছে। মৌলবাদী চক্র কোনোদিন আমাদের বন্ধু হতে পারে না। এটা আমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে।
নিজামুল হক নাসিম বলেন, যুদ্ধ কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। আমাদেরকে রাজনৈতিকভাবে এটার সমাধান করতে হবে। জান্তা সরকার থাকা অবস্থায় এই সমস্যার সমাধান হবে কি না জানি না।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পশ্চিম) সাব্বির আহমেদ চৌধুরী বলেন, আমাদের চেষ্টা সবসময় কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা। বাংলাদেশ-মিয়ানমার সমস্যাটি এখন আন্তর্জাতিক সমস্যায় রূপ নিয়েছে রোহিঙ্গা ইস্যুতে। মিয়ানমার একা নয়, তাদের পাশে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারত, রাশিয়া ও চীন ছিল। ইন্দোনেশিয়া বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুসলিম দেশ হলেও তারা বাংলাদেশ ও রোহিঙ্গাদের পক্ষে অবস্থান নেয়নি। মালয়েশিয়া কিছুটা পক্ষে ছিল।
জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার বলেন, মিয়ানমারের উসকানিমূলক কার্যক্রম আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতি অনুযায়ী কখনো বরদাশত করা যায় না। এটি তাদের নিজস্ব সমস্যা হলেও আমার মেনে নিতে পারি না। আন্তর্জাতিকভাবে এ সংকট সমাধানে কাজ করতে হবে। এ ধরনের কাজ ঠেকাতে আমাদের প্রস্তুতি আছে। আমরা আমাদের বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতা নেব প্রয়োজনে।
সেমিনারে বাংলাদেশের শান্তি পরিষদের সভাপতি মোজাফফর হোসেন পল্টুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন শান্তি পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাম্বাসেডর মমতাজ হোসেন, অধ্যাপিকা মাহফুজা খানম, ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন, ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা কমরেড মোস্তফা আলম রতন প্রমুখ।