স্পোর্টস ডেস্ক : আফগানিস্তানের কাছে ৮ উইকেটের বিশাল হারটাই এশিয়া কাপের পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কাকে দিয়েছে তাতিয়ে। বাংলাদেশকে হারিয়ে সুপার ফোর নিশ্চিত করে অন্য এক শ্রীলঙ্কা দলের আবির্ভাব দেখেছে দর্শক।
এক ম্যাচ হাতে রেখে ফাইনাল নিশ্চিত করেও গ্রুপ রাউন্ডের শেষ ম্যাচে আয়েশি মেজাজে খেলার পক্ষপাতী নয় দাসুন শানাকার দলটি। ছন্দ ধরে রেখে,আত্মবিশ্বাস নিয়ে ফাইনালে অবতীর্ন হওয়াটাই ছিল তাদের লক্ষ্য।
হাসারাঙ্গার বোলিং (৩/২১) এবং ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কার ব্যাটিংয়ে (৫৫*) সুপার ফোর-এর শেষ ম্যাচে ১৮ বল হাতে রেখে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নিয়েছে শ্রীলঙ্কা।
এক ম্যাচ হাতে রেখে ফাইনাল নিশ্চিত করায় দুবাইয়ে শুক্রবার রাতের ম্যাচটি স্রেফ রূপ পেয়েছে ফাইনালের ড্রেস রিহার্সল ম্যাচে। এমন এক ম্যাচে সাইড বেঞ্চ পরীক্ষা করেছে দু’দল। পাকিস্তান দিয়েছে বিশ্রাম দলের সেরা পেসার নাসিম শাহ, লেগ স্পিন অলরাউন্ডার সাদাব খানকে।শ্রীলঙ্কার হয়ে টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হয়েছে তরুণ পেসার প্রমোদ মাধুশনের। অভিষেকে পেয়েছেন ২ উইকেট (২/২১)।
গা গরমের ম্যাচে ছন্দে ফিরেছেন শ্রীলঙ্কা লেগ স্পিনার হাসারাঙ্গা। পর পর দুই ম্যাচে উইকেটহীন খরুচে বোলিংয়ের অপবাদ ঘুঁচিয়ে ফিরেছেন ফর্মে হাসারাঙ্গা (৪-০-২১-৩)। পেসার থিকসানাও করেছেন মিতব্যয়ী বোলিং (৪-০-২১-২)। তাতেই পাকিস্তান পায়নি প্রত্যাশিত স্কোর। থেমেছে তারা ১২১/১০-এ।
টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে এদিন হতাশ করেছে পাকিস্তান ব্যাটাররা। ব্যাটিং পাওয়ার প্লে-তে ৪৯/১ স্কোরের পরও ইনিংসের অবশিষ্ট ১৪ ওভারে টেস্ট মেজাজে করেছে ব্যাটিং পাকিস্তান। ৭২ রান যোগ করে হারিয়েছে এই সময়ে ৯ উইকেট। ডেথ ওভারের ব্যাটিং রসায়নটা এদিন ভুলে গেছে পাকিস্তান। শেষ ৩০ বলে ৩০ রান যোগ করেছে ৪ উইকেট হারিয়ে।
পাকিস্তানের পুরো ইনিংসে এদিন ৪টি চার এর পাশে ছিল ৩টি ছক্কা। ওয়াইড থেকে বোনাস ১৫টি রান পেয়েছে পাকিস্তান। যার মধ্যে একটি ওয়াইড পরিণত হয়েছে বাউন্ডারিতে। ১২০টি বলের মধ্যে ৫১টি ডট করেছে পাকিস্তান ব্যাটাররা।
এই ম্যাচে রানে ফিরতে ওয়ানডে আমেজে ব্যাট করে ইনিংসটা ক্যারি করতে পারেননি পাকিস্তান সেনসেশন বাবর আজম। হাসারাঙ্গার তৃতীয় ওভারে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে যেয়ে হয়েছেন বোল্ড (২৯ বলে ২ চার-এ ৩০)।
লেট অর্ডার নেওয়াজ ১৮তম ওভারে থিকসানাকে মেরেছেন ২টি ছক্কা, একটি এক্সট্রা কভারের উপর দিয়ে,অন্যটি লং অফের উপর দিয়ে। তবে রান আউটে থেমেছেন তিনি (১৮ বলে ২ চার, ২ ছক্কায় ২৬)।
লো স্কোরিং ম্যাচে ১২২ রানের টার্গেটে শ্রীলঙ্কা ব্যাটিং পাওয়ার প্লে-তে খেয়েছে ভাল ঝাঁকুনি। এই পর্বে ৩৬ রান উঠতে হারিয়েছে তারা ২ উইকেট। তবে ২৯ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ৪র্থ জুটির ৩৯ বলে ৫১ রানে ঘুরে দাঁড়িয়েছে শ্রীলঙ্কা। ২৮তম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৭ম হাফ সেঞ্চুরি উদযাপন করেছেন পাথুম নিশাঙ্কা।
ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ উইনিং ৫২’র পর পাকিস্তানের বিপক্ষে ৪৮ বলে ৫ চার, ১ ছক্কায় ৫৫ রানের হার না মানা ইনিংস দিয়েছেন উপহার। হাসান আলীর প্রথম ওভারে ৩ বাউন্ডারিতে দারুণ একটি রাতের আভাস দিয়েছিলেন পাথুম। হাসান আলীর দ্বিতীয় ওভারে মেরেছেন ২টি বাউন্ডারি।
প্রথম দুই ওভারে ২ উইকেট পাওয়া হাসনাইন (৩-০-২১-২) এবং হারিস রউফ ছাড়া (৩-০-১৯-২) এদিন পাকিস্তানের অন্য কোনো বোলার প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি। লেগ স্পিনার ওসমান কাদের খেয়েছেন ভাল মার (৪-০-৩৩-১)। তার প্রথম তিন ওভারে একটি করে ছক্কা মেরেছে শ্রীলঙ্কা ব্যাটাররা।
পাকিস্তান : ১২১/১০ (১৯.১ ওভারে)
শ্রীলঙ্কা : ১২৪/৫ (১৭.০ ওভারে)
ফল : শ্রীলঙ্কা ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : হাসারাঙ্গা (শ্রীলঙ্কা)।