শিরোনাম :
পাকিস্তানে প্রধান বিচারপতির ক্ষমতা হ্রাস করল পার্লামেন্ট ৫১টি হাসপাতালে শুরু হচ্ছে ‘ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস’ সৌদিতে বাস দুর্ঘটনায় মৃত বাংলাদেশির সংখ্যা বেড়ে ১৮ সরকারের অবৈধ হত্যাকাণ্ডের বিচার এই বাংলার মাটিতেই হবে : ছাত্রদল পদ্মা সেতুর রেললাইন নির্মাণ কাজ সমাপ্ত বিএনপি বুঝতে পেরেছে, নির্বাচনে তাদের কোনো আশা নেই : তথ্যমন্ত্রী গণতান্ত্রিক দল হয়ে আ.লীগ কেন গণতন্ত্র হত্যা করছে: মঈন খান সাকিব-লিটনের রেকর্ডময় দিনে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদে ইউএনওদের ক্ষমতা কেড়ে নিলেন হাইকোর্ট দেশে বেকারের সংখ্যা ২৬ লাখ ৩০ হাজার আন্তর্জাতিক বাজারে কমল স্বর্ণের দাম দেশে ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪ জনের করোনা শনাক্ত নির্বাচন কমিশনের আলোচনার প্রস্তাব গ্রহণ করছে না বিএনপি: ফখরুল আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের উপজেলা পরিষদে ইউএনওদের ক্ষমতা কেড়ে নিলেন হাইকোর্ট

সার্চ কমিটিতেই নতুন ইসি: আ.লীগ-বিএনপি দ্বিধান্বিত

  • বৃহস্পতিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১

কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে আগামী ফ্রেব্রুয়ারিতে। সময়ের হিসেবে মাস চারেকের কিছুটা বেশি সময় হাতে থাকলেও নির্বাচন কমিশন নিয়ে সরগরম রাজনৈতিক অঙ্গন।

সরগরমের কারণটাও সহজ। এই নতুন কমিশনের অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সাংবিধানিক হিসেবে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে যেকোনো দিন হবে ভোট। তাই দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনার প্রধান বিষয়বস্তু হয়ে উঠছে নির্বাচন কমিশন গঠন।

বর্তমান কমিশন নিয়ে অনাস্থা জানিয়ে আসছে বিএনপি। যদিও বর্তমান কমিশনের অধীনে জাতীয় নির্বাচন ও স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচনে অংশ নিয়েছে দলটি।

তবে সংবিধান মেনে বিদ্যমান আইনি কাঠামোতেই নির্বাচনে যেতে চায় আওয়ামী লীগ। বিষয়টি দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কথায় অনেকটা পরিষ্কার হয়ে গেছে। রাষ্ট্রপতি যে প্রক্রিয়ার নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন, সেটাতেও পূর্ণ সমর্থন দেয়ার কথা জানিয়েছে আওয়ামী লীগ।

বরং সংবিধান মেনে বিদ্যমান আইনি কাঠামোতেই কীভাবে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করা যায় তা নিয়ে নিজেদের মতামত নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে বিএনপিকে আহ্বান জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগও মতামত কমিশনে দেবে বলে জানান তিনি।

ক্ষমতাসীন দলটির সভাপতিমণ্ডলির সদস্য আব্দুর রাজ্জাক জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী নির্বাচন কমিশনও সার্চ কমিটির মাধ্যমে গঠন করা হবে।

কৃষিমন্ত্রী রাজ্জাক বলেন, ‘সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের নাম রাষ্ট্রপতির কাছে যাবে। রাষ্ট্রপতি তাদেরকে নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। কমিশন তাদের শপথ অনুযায়ী স্বাধীনভাবে সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন পরিচালনা করবেন। এক্ষেত্রে সরকারের কোনো ভূমিকা বা হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই, থাকবেও না।’

এই নেতা বলেন, ‘সব কিছু বিচার বিবেচনায় নিয়ে যেভাবে মহামান্য রাষ্ট্রপতি সার্চ কমিটি গঠন করেন সেভাবেই তো হওয়ার কথা। আমরা অপেক্ষায় রয়েছি, বিষয়টিকে স্বাগত জানাতে।’

বিষয়টি নিয়ে এত বেশি সোরগোলের প্রয়োজন আছে বলেও মনে করেন না বাহাউদ্দিন নাছিম।

অবশ্য বিএনপি এখনও তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেনি। নির্বাচনে তারা অংশ নেবে কি না, নিলে কোনো শর্ত মেনে নেবে- সেগুলো নিয়ে এখনও দলটির নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

তিনি বলেন, ‘এ সমস্ত কিছু নিয়ে আমাদের নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা চলছে। হাইকমান্ডের সঙ্গে আমরা সেটা নিয়ে নিয়মিত বসছি।’

নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি আহ্বান জানালে তারা সাড়া দেবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি যদি আহ্বান জানান আমরা সেক্ষেত্রে হাইকমান্ডের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেব যে কী করব। আগের দুই নির্বাচনে যা হলো সেটা আর রিপিট করতে চাই না।’

দলটির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য বললেন, নির্বাচন নয়, আন্দোলনের দিকে মনোনিবেশ করতে চান তারা।

তিনি বলেন, ‘আমরা আন্দোলনে যেতে চাই। নির্বাচনে এবার না যাওয়ার জন্যই জোর দিচ্ছি। তবে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’

স্বাধীনতার ৫০ বছরেও নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে কোনো আইন তৈরি হয়নি দেশে। তবে সংবিধান অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির হাতে।

২০১২ সাল থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে চার কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপের সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে দেশে।

সার্চ কমিটিতেই নতুন ইসি: আ.লীগ প্রস্তুত, বিএনপি দ্বিধান্বিত
২০১৭ সালে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান ২০১২ সালে এবং বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ২০১৭ সালে অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করে সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন নিয়োগ দিয়েছিলেন।

সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘(১) প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনধিক চার জন নির্বাচন কমিশনারকে লইয়া বাংলাদেশের একটি নির্বাচন কমিশন থাকিবে এবং উক্ত বিষয়ে প্রণীত কোন আইনের বিধানাবলী-সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগদান করিবেন।’

তবে সংবিধানের আলোকে ওই আইন না হওয়ায় প্রতিবারই নির্বাচন কমিশন গঠনে জটিলতা দেখা দেয়। সেই জটিলতা এড়াতে শেষ দুইবার সার্চ কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা হলেও বিতর্ক থামেনি।

গত দুইবারের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, নতুন বছরের আগেই মধ্য ডিসেম্বরে সংলাপ শুরুর উদ্যোগ নেন রাষ্ট্রপতি। মধ্য জানুয়ারিতে সংলাপ শেষ হয়। সার্চ কমিটি গঠিত হয় জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে; নাম প্রস্তাব, বাছাই শেষে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে সিইসি ও ইসির নাম প্রকাশ করা হয়।

এভাবেই কাজী রকিবউদ্দিন আহমদ ও কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন কমিশন দায়িত্ব পেয়েছিল।

সার্চ কমিটিতেই নতুন ইসি: আ.লীগ প্রস্তুত, বিএনপি দ্বিধান্বিত
২০১৭ সালে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি

বর্তমান কমিশন গঠনের আগে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। সেখানে দলগুলো পাঁচটি করে নাম প্রস্তাব করেছিল। সেই নামগুলো বিবেচনায় নিয়ে অনুসন্ধান কমিটি মোট ১০ জনের নাম রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করে। সেখান থেকে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ পাঁচ সদস্যের বর্তমান কমিশন গঠন করেন।

এবার বঙ্গভবন কী ভাবছে জানতে চাওয়া হয় রাষ্ট্রপতির প্রেসসচিব জয়নাল আবেদীনের কাছে। তিনি বলেন, ‘এটা নিয়ে এখনও কোনো আলাপ আলোচনা হয়নি।’

২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় এ টি এম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন ইসি গঠনের জন্য আইনের একটি খসড়া তৈরি করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আইনটি হয়নি।

সংবাটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খরব
© Copyright © 2017 - 2021 Times of Bangla, All Rights Reserved