কিশোরগঞ্জ : কিশোরগঞ্জে ১০ বছর বয়সী হেফজ বিভাগের এক ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে জামিয়াতুস সুন্নাহ নামে একটি মাদরাসার অধ্যক্ষ ও শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। মাদরাসাটি জেলা শহরের নগুয়া শ্যামলী রোডের একটি তিনতলা ভবনে প্রতিষ্ঠিত।
সোমবার (৩০ আগস্ট) রাত সোয়া ১টায় মাদরাসা ছাত্রের পিতা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী ২০০৩) এর ৯(১)/৩০ ধারায় কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলাটি (নং-৫০, তারিখ: ৩০/০৮/২০২১) দায়ের করেন।
মামলায় অভিযুক্ত দুইজন হলেন, জামিয়াতুস সুন্নাহ মাদরাসার শিক্ষক হাফেজ বেলাল হোসেন বিল্লাল (২৫) এবং মাদরাসার অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা মুফতী হোসাইন মোহাম্মদ নাঈম (৩৩)।তাদের মধ্যে হাফেজ বেলাল হোসেন বিল্লাল ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার পাড়া পাঁচাশি গ্রামের মো. মজিবুর রহমানের ছেলে এবং হাফেজ মাওলানা মুফতী হোসাইন মোহাম্মদ নাঈম কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার কান্দাইল গ্রামের মো. আবুল হাসেমের ছেলে।
মামলায় মাদরাসার শিক্ষক হাফেজ বেলাল হোসেন বিল্লালের বিরুদ্ধে বলাৎকারের অভিযোগ এবং অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা মুফতী হোসাইন মোহাম্মদ নাঈমের বিরুদ্ধে অভিযুক্ত শিক্ষক বিল্লালকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতার অভিযোগ করা হয়েছে। মামলায় বলা হয়েছে, বলাৎকারের শিকার মাদরাসা ছাত্রের পিতা একটি প্রাইভেট ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে ঢাকায় কর্মরত রয়েছেন। অন্যদিকে ছাত্রটির মা কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা।
এ দম্পতির একমাত্র পুত্রসন্তানকে শহরের নগুয়া শ্যামলী রোডের তিন তলা বিশিষ্ট নাঈম কটেজের তৃতীয় তলায় জামিয়াতুস সুন্নাহ মাদরাসায় পাঁচ বছর আগে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সে হেফজ বিভাগে পড়ে। মাদরাসার শিক্ষক হাফেজ বেলাল হোসেন বিল্লাল গত ১৫ আগস্ট সকালে মাদরাসার তৃতীয় তলার টয়লেটে নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে শিশুটিকে বলাৎকার করে। এরপর গত ২৭ আগস্ট সকালে শিশুটিকে টয়লেটে নিয়ে আবারও বলাৎকার করে বিল্লাল।
এ ঘটনার পর ওইদিন সকালেই শিশুটি বাসায় চলে যায়। বিকালে মাদরাসার অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা মুফতী হোসাইন মোহাম্মদ নাঈম শিশুটির পিতাকে ফোন করে ছেলেকে মাদরাসায় পাঠানোর কথা বলার পর ছেলেকে মাদরাসায় যেতে বললে সে হাউমাউ করে কান্নাকাটি শুরু করে এবং বলাৎকারের ঘটনা পিতার কাছে খুলে বলে।
ওইদিনই তিনি আত্মীয়স্বজন নিয়ে মাদরাসায় গিয়ে অধ্যক্ষের কাছে বিষয়টি জানালে অভিযুক্ত শিক্ষক বিল্লালকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এক পর্যায়ে বিল্লাল অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে। ছেলেটির পিতা ও স্বজনেরা সেখান থেকে চলে আসার পর তারা জানতে পারেন, মাদরাসার অধ্যক্ষের সহায়তায় অভিযুক্ত শিক্ষক বিল্লাল মাদরাসা থেকে পালিয়ে গেছে।নএ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মো. আবুবকর সিদ্দিক পিপিএম জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।