আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রোহিঙ্গাদের প্রথম সারির নেতা মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহ হত্যার তদন্ত দাবি করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। একই সঙ্গে হত্যাকারীকে চিহ্নিত করে তাকে বা তাদেরকে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যায় কক্সবাজারে শরণার্থী শিবিরে গুলি করে হত্যা করা হয় মুহিবুল্লাহকে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ক্যাম্পেইনার সাদ হাম্মাদি বলেছেন, রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের শীর্ষ স্থানীয় একজন প্রতিনিধি ছিলেন মুহিবুল্লাহ। তিনি ক্যাম্পের সহিংসতার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন।
সমর্থন দিয়েছেন শরণার্থীদের মানবাধিকারের পক্ষে এবং তা সুরক্ষিত রাখায়। তার হত্যাকাণ্ডে পুরো সম্প্রদায়ের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করেছে। এখন বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব তার এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করা এবং এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি বিচার করা।
সাদ হাম্মাদি আরও বলেন, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ এবং জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক এজেন্সির প্রতি আমরা আহ্বান জানাই একত্রে কাজ করে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে অবস্থানরত শরণার্থী, নাগরিক সমাজের কর্মী, রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি মানবাধিকার কর্মীসহ ওই শিবিরে অবস্থানরত মানুষদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। এসব মানুষের অনেকেই নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
সাদ হাম্মাদি বলেন, কক্সবাজারে শরণার্থী শিবিরে সহিংসতা একটি ক্রমবর্ধমান সমস্যা। সশস্ত্র গ্রুপগুলো সেখানে মাদকের ব্যবসা করছে। তারা মানুষ হত্যা করছে এবং জিম্মি করছে। সেখানে আরো রক্তপাত বন্ধে কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে।
উল্লেখ্য, মুহিবুল্লাহ (৪৮) আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের নেতৃত্বে ছিলেন। তাকে কক্সবাজারের কুতুপালং শিবিরের নিজের অফিসে স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৮টার দিকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
২০১৯ সালে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করেছেন মুহিবুল্লাহ। দু’বছর আগে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে ক্যাম্প ছেড়ে কমপক্ষে ২ হাজার শরণার্থী অন্য শিবিরগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন। এই সহিংসতা শুরু হয় প্রতিদ্বন্দ্বী দুটি গ্রুপের মধ্যে। আশ্রয় শিবিরের ভিতরে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এই সংঘর্ষ। ২০২০ সালের ৮ই অক্টোবর কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে প্রায় এক ডজন ঘর পুড়ে মাটিতে মিশে যায়।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বলেছেন, সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে দুটি গ্রুপের মধ্যে। একটি গ্রুপ আশ্রয় শিবিরের ভিতরে মাদকের ব্যবসা চালাচ্ছে। অন্যটি হলো সশস্ত্র আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি (আরসা)। তারাও এই শিবিরের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা করছে।