শিরোনাম :
বিএনপি এখন সন্ত্রাসী দলে পরিণত হয়েছে: হানিফ সূচকের সাথে বেড়েছে লেনেদেন অবরোধ সফলে কমলাপুরে যুবদলের বিক্ষোভ মিছিল বিএনপিকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হচ্ছে না কেন, প্রশ্ন কাদেরের সিরাজগঞ্জে যুবদলের ৩ নেতা গ্রেফতার তিন টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর পদত্যাগ কার্যকর রুশ-ভারতের সাহায্য নিয়েও সরকারের পতন ঠেকানো যাবেনা বিএনপির আরও দুই নেতাকে বহিষ্কার ঋণ আমানতের সুদের ব্যবধান তুলে নিল বাংলাদেশ ব্যাংক আদালত চত্বরে ককটেল বিস্ফোরণ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ: ইইউর কারিগরি প্রতিনিধি দল ঢাকায় ক্রাচে ভর করে মিছিলে যুবদল নেতা রাজধানীতে পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার ৩৪ বায়ুদূষণে আজ শীর্ষ চারে ঢাকা শ্যামলের নেতৃত্বে রামপুরায় সড়ক অবরোধ ও মিছিল

যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে তীব্র শ্রমিক সংকট, জালানির অভাবে ইউরোপ জুড়ে আতঙ্ক

  • শনিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়াতে সবচেয়ে বেশি শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। সাম্প্রতিক এক জরিপ বলছে টিকাদান কর্মসূচির পাশাপাশি কোভিড পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসার পর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কর্মসূচি বাস্তবায়নের মধ্যে এধরনের শ্রমিক সংকট অর্থনীতিবিদদের জন্যে মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ক্যারিয়ার ক্লাউডের জরিপে বলা হচ্ছে, প্রতিজন বেকার ব্যক্তির বিপরীতে কর্ম খালি রয়েছে দ্বিগুনেরও বেশি অর্থাৎ ২.৩৭ শতাংশ। হাওয়াইতে এর পরিমান শুণ্য দশমিক ৪১ শতাংশ। আবার যুক্তরাষ্ট্রে কাজের বাইরে আছে ৮০ লাখেরও বেশি মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রে শ্রমবিভাগের তথ্য বলছে কর্মের সুযোগ বাড়ছে অথচ শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না এ পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত আরও কঠিন হচ্ছে।

অনেকে বেকার ভাতা ছাড়াও কোভিডের সময় বিশেষ অর্থ সাহায্যকে শ্রমিক সংকটের কারণ বলে দায়ী করছেন। আবার আশি লাখেরও বেশি মানুষ কাজের বাইরে রয়েছেন অন্তত ৬ মাস ধরে। এর পাশাপাশি ২৭ লাখ মানুষ নিয়মিত তাদের বেকার ভাতা পাচ্ছেন। তবে তারা সপ্তাহে অতিরিক্ত ৩শ ডলারের সম্পুরক সহায়তা পাচ্ছেন না। ম্যানপাওয়ার গ্রুপ বলছে একই সময়ে মার্কিন কোম্পানিগুলো জানিয়েছে তাদের লোকবল ভীষণ প্রয়োজন। যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ১২টি শিল্পখাতে লোকবলের চাহিদা গত ১২ বছরে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।

একই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে ব্রিটেনে। ব্রিটেনে শ্রমিক সংকটের সঙ্গে যোগ হয়েছে জালানি সংকট। শ্রমিকের অভাবে শপিংমলগুলোতে চাহিদা অনুসারে পণ্য সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ব্রিটেনের অভিবাসন আইন ও কোভিডকালীন সংকট। ব্রিটেনে শুধু গাড়ি চালকের অভাব রয়েছে এখন অন্তত ১ লাখ। বছরে ৫০ হাজার পাউন্ড বেতন দেওয়ার কথা বললেও চালক মিলছে না। বিশেষ করে ট্রাক বা লরি চালকের ভীষণ চাহিদা রয়েছে।

জালানি সংকটে এর দাম বেড়ে যাওয়া তা নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে খাদ্যপণ্যের ওপর। একই সঙ্গে কার্বনডাই অক্সাইডের ব্যবহারের ওপর বিধি নিষেধে এর প্রভাব পড়েছে প্যাকেজিং ও মাংস উৎপাদনের ওপর। সার কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার কারণে খাদ্য শিল্পে প্রভাব স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

বার্নার্ড ম্যাথিউস ও টু সিস্টারস ফুডের মালিক রঞ্জিত সিং বোপারান বলেন, চালকের অভাবে ক্রিসমাসে তার্কি সরবরাহ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

ফুড এন্ড ড্রিংক ফেডারেশনের চিফ এক্সিকিউটিভ আয়ান রাইট বলেন, ভোক্তাদের পণ্য সরবরাহে আমাদের ব্যর্থতার বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া উচিত। পলট্রি, পর্ক, বেকারি পণ্য তাদের চাহিদা অনুসারে সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। ব্রিটেনের সবচেয়ে বড় রুটি কোম্পানি ওয়ারবার্টনস কার্বনডাই অক্সাইড নিয়ন্ত্রণে তাদের ৪টি প্লান্টের দুটি বন্ধ করে দিয়েছে। স্বাভাবিকভাবে তাদের রুটি উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বাজারেও।

শতাধিক খাদ্যপণ্যে কার্বনডাই অক্সাইডের ব্যবহার ব্রিটেনে প্রশ্নের মুখে পড়ায় এধরনের পণ্যের যোগান কমে গেছে। খুচরা বিক্রেতারা এরই মধ্যে ক্রিসমাস ট্রি এবার অতিরিক্ত মূল্যে কিনতে হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। বেশিরভাগ ক্রিসমাস ট্রি ব্রিটেনে আমদানি করতে হয়। ব্রেক্সিট পরবর্তী অভিবাসন বিধির কারণে ব্রিটেনে লোকবল সংকটের আরেক কারণ।

ম্যাকডোনাল্ডস, কেএফসি, গ্রেগস, সাবওয়ে ও নান্দোসের মত বড় বড় খাদ্য কোম্পানিগুলো চালক সংকটে ভুগছে। গত আগস্টে ম্যাকডোনাল্ডস বাধ্য হয়ে বাজারে মিল্কশেক ও বোতলজাত পাণীয় সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। গ্রেগসের মুরগির সরবরাহ আশঙ্কাজনকহারে হ্রাস পেয়েছে। ব্রিটেনের সবচেয়ে বড় দুগ্ধজাত পণ্য সরবরাকারী আর্লা বলছে তাদের একচতুর্থাংশ পণ্য সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না চালকের অভাবে। টেসকো, সেইন্সবারি, মরিসন্স, কো-অপ এন্ড আইচল্যান্ড ফুডস কোম্পানিরও একই অবস্থা। হ্যালফোর্ডের সাইকেল বিক্রি কমেছে ২৩ শতাংশ।

আবার সরবরাহ দিতে না পারায় জিনিসপত্রের দামও বেড়েছে ২০ শতাংশ। একই সঙ্গে গ্যাস, কেমিক্যাল ও ইস্পাত পণ্য উৎপাদনও বিঘ্নিত হচ্ছে। এবছরের শুরুতে গ্যাসের পাইকারি মূল্য বেড়েছে আড়াইশ শতাংশ। গত আগস্ট থেকে গ্যাসের দাম বেড়েছে আরো ৭০ শতাংশ। বাল্ব ও ইগলুর মত কোম্পানিগুলো বন্ধ হয়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে।

ইউরোপের অন্যান্য দেশে একই ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের রিপোর্টার জিনজু লি তার প্রতিবেদনে বলেন গত ৫ বছরের মধ্যে ইউরোপে চলতি সেপ্টেম্বরে গ্যাসের মজুদ সর্বনিম্নে রয়েছে। একই সঙ্গে ফ্রান্সে বিদ্যুতের মূল্য আসন্ন শীতে ১০ শতাংশ বাড়বে। এক বছরের আগের চাইতে তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত কয়লার মূল্য বেড়েছে তিন গুণ।

খোদ যুক্তরাষ্ট্রে জালানির দাম বাড়তে থাকায় খুব সহজেই এর নেতিবাচক পড়ছে ইউরোপে। কারণ এখনো জালানির ওপর ইউরোপ অনেকটাই যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল। গত বছরের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাসের দাম দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। জালানি রফতানি হ্রাসের দাবি বাড়ছে খোদ যুক্তরাষ্ট্রেই। একই ধরনের উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে চীনেও। কয়লার অভাবে বাধ্য হয়ে চীনের অনেক কারখানায় বয়লার বন্ধ করে দিতে হচ্ছে।

সংবাটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খরব
© Copyright © 2017 - 2021 Times of Bangla, All Rights Reserved