ঢাকা : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আপত্তিকর ও রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভুতভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ব্যক্তিগত আক্রমণ করবেন না, কারণ পরে সামাল দিতে পারবেন না।
রোববার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে নয়াপল্টনে যৌথ সভা শেষে ‘মির্জা ফখরুল সাহেব টাকার বস্তার ওপরে শুয়ে শুয়ে স্বপ্ন দেখেন’— আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন মন্তব্যের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
ফখরুল বলেন, কেঁচোখুঁড়তে গিয়ে সাপ বের হবে। আপনারা কি করেন না করেন গোটা বাংলাদেশের মানুষ জানে। কীভাবে অর্থ উপার্জন করেন এটাও সকলে জানে। আমরা পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে রাজনীতি করি। আমরা কারো পয়সায় রাজনীতি করি না।
আওয়ামী লীগের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমাদের দলের প্রতিটা সদস্য নিজেরা চাঁদা দিয়ে প্রতিটা সমাবেশ সফল করছে। এটাই হচ্ছে আমাদের বৈশিষ্ট্য।
ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, আপনারা কি করেন না- করেন এটা বাংলাদেশের সকলেই জানেন। আপনাদের কে কোথায় হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হচ্ছেন, কে কোথায় ব্যাংকের লোন নিয়ে পাচার করছেন। কানাডাতে বেগমপাড়া, সিঙ্গাপুর মালয়েশিয়াতে সেকেন্ড হোম সবখবর আমরা জানি। কে কয়টা ব্যাংকের মালিক হলেন, আমেরিকায় কার কতগুলো বাড়ি আছে মানুষ জানে।
ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের হাতে গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের সব স্বপ্ন ভেঙে গেছে। অর্থনীতিকে ভাগাড়ে পরিণত করেছে। দুর্নীতি লুটপাট করে আবারও বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করছে আওয়ামী সরকার। মিথ্যাচার, প্রতারণা করে আবার একদলীয় শাসনের দিকে নিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, সরকার কৌশল করে আদালত দিয়ে প্রতারণা করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দিয়েছে। জাতিকে ভুল বুঝিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার প্রয়াস আওয়ামী লীগের। আওয়ামী লীগ দেউলিয়া হয়ে গেছে বলেই বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে গায়েবী মামলা দিচ্ছে।
৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, দিনটি জাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। জনগণ ও দেশপ্রেমিক সৈনিকদের অভ্যুত্থানে নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের শুভসূচনা হয়েছিল। ভ্রান্ত সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির অন্ধকার গহ্বর থেকে টেনে তুলেছিলেন জিয়াউর রহমান। ৭ নভেম্বরের মধ্য দিয়ে জাতি নতুন করে আশা দেখতে শুরু করেছিল।
তিনি বলেন, আওয়ামী দুঃশাসনের কারণে শতকরা ৩০ ভাগ লোক খাদ্য সংকটে। নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙে ফেলেছে। নিজেদের তৈরি করা আদালতের মধ্য দিয়ে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন বাতিল করে জাতির সবচেয়েয়ে বড় ক্ষতি করেছে। জাতিকে সবসময় বোকা বানানোর চেষ্টা করে আওয়ামী লীগ। জনগণের প্রতি আস্থা থাকলে এতো ভয় কেন। বিরোধীদলকে সভা সমাবেশ কেন বাধা দেন?
দেশের মানুষের কাছে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সকল পেশার লোকজনকে আহ্বান জানাই আমাদের এই প্রিয় দেশকে রক্ষা ও মুক্ত করার জন্য, আমাদের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য আমরা আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছি। আমরা আরও শক্তি সঞ্চয় করে এদের পরাজিত করব।