ঢাকা : বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ৩২ জেলেসহ ৬দিন ধরে নিখোঁজ দুইটি মাছ ধরার ট্রলার। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরগুনা জেলা ট্রলার মালিক সমিতিরি সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরি। নিখোঁজ ট্রলার দুটির নাম এফবি মায়ের দোয়া এবং এফবি আবদুল্লাহ।
এর মধ্যে এফবি মায়ের দোয়া ট্রলারে ১২ জন জেলে এবং এফবি আবদুল্লাহ ট্রলারে ২০ জন জেলে ছিলেন। ট্রলার দুটির মালিক পাথঘাটার আব্দুর রহমান এবং মো. লিটন। বরগুনা জেলা মৎস্যজীবি ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ঝড়ের কবলে পথ হারিয়ে অনেক ট্রলার ভারতের সীমানায় চলে যায়। পরবর্তীতে তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলেও দুটি ট্রলারের এখনো সন্ধান মেলেনি।
নিখোঁজ জেলেরা হলেন, এফবি মায়ের দোয়া ট্রলারের পাথরঘাটা উপজেলার মঠেরখাল এলাকার নুর মোহাম্মাদ মিস্ত্রির ছেলে শাহ জাহান, ছত্তার মোল্লার ছেলে আব্দুর রশিদ, খালেক মিস্ত্রির ছেলে মাসুদ, আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে আমির হোসেন, আব্দুর রহমানের ছেলে মিরাজ, নুরু মিয়ার ছেলে ছগির, তাফালবাড়ি এলাকার খলিল গোলদারের ছেলে ফারুক, আব্দুর রহমানের ছেলে আব্দুস ছত্তার, আব্দুল লতিফেত ছেলে নাসির, জ্ঞানপাড়া এলাকার আব্দুল গনির ছেলে খলিল, কুদ্দুসের ছেলে আবুল কালাম, বড় টেংরা এলাকার আবুল হাসেমের ছেলে ফুল মিয়া এবং এফবি আব্দুল্লাহ ট্রলারের খোকন মাঝি, হুমায়ুন, শাহজাহান ও রাসেল। এফবি আব্দুল্লাহ ট্রালারের অন্য জেলেদের নাম জানা যায়নি, তাদের সকলের বাড়ি নোয়াখালী জেলার আলেকজান্ডার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লিটন মাহমুদের এফবি আব্দুল্লাহ ট্রালারটি গত ২৫ সেপ্টেম্বর সন্ধার দিকে এবং গত ২৪ সেপ্টেম্বর আব্দুর রহমানের এফবি মায়ের দোয়া ট্রলারটি দেশের বৃহত্তম মৎস্য কেন্দ্র থেকে মাছ শিকারের উদ্দেশ্যে বঙ্গোপসাগরে ছেড়ে যায়। এরপরে এফবি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি শাহজাহানের সাথে গত ২৮ সেপ্টেম্বর সাক্ষাত হলেও এরপর থেকে আর কোন যোগাযোগ করতে পারেননি ট্রলার মালিক।
এদিকে, আব্দুল্লাহ ট্রলারের মালিক লিটন মাহমুদ তার মাঝির সাথে সাগরে যাওয়ার পর থেকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন খবর পাননি। গোলাম মোস্তফা চৌধুরী ট্রলার মালিকদের বরাত দিয়ে জানান, এফবি মায়ের দোয়া ও এফবি আব্দুল্লাহ ট্রলার গত ৭দিন ধরে নিখোঁজের খবর ট্রলার মালিকদের মাধ্যমে পেয়েছি। খবর জানার সাথে সাথেই উদ্ধারের জন্য জেলা ট্রলার মালিক সমিতির পক্ষ থেকে ৩টি ট্রলার উদ্ধার অভিযানে সাগরে পাঠানো হয়েছে। দুইদিন বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন পয়েন্টে অনুসন্ধান চালিয়েও তাদের খোঁজ না পেয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর অনুসন্ধানে যাওয়া ট্রলার ফিরে এসেছে। শুক্রবার রাতেই এ ব্যাপারে পাথরঘাটা থানায় সাধারণ ডাইরি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কোস্টগার্ডের পাথরঘাটা স্টেশনের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট ফাহিম শাহরিয়ার সাংবাদিকদের জানান, কোস্টগার্ডের দক্ষিণ জোন ও পশ্চিম জোনসহ সবাইকে জানানো হয়েছে। নিখোঁজ ট্রলার ও জেলেদোর উদ্ধারের জন্য অভিযান চলছে। উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৮ সেপ্টম্বর বৈরি আবহাওয়ার কারনে উত্তাল বঙ্গোপসাগরে তিনটি ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে। এতে চার জেলের মৃত্যু হয়।