আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কঠোর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই উত্তর কোরিয়া তার পরমাণুসহ অন্যান্য অস্ত্রের কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি জাপান উপকূলের জলসীমা বরাবর একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে উত্তর কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনী এমনটাই দাবি করেছে। আজ মঙ্গলবার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
উত্তর কোরিয়া ইস্যুতে সিউলে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাপ্রধানদের বৈঠকের প্রাক্কালে পিয়ংইয়ংয়ের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার খবর এল।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় পিয়ংইয়ং হাইপারসনিক ও দূরপাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পাশাপাশি বিমানবিধ্বংসী অস্ত্রের পরীক্ষা চালানোর দাবি করেছে।
উত্তর কোরিয়ার ওপর ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালানোর ব্যাপারে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় দেখা গেছে, উত্তর কোরিয়া তার অস্ত্র কর্মসূচি জোরেশোরে এগিয়ে নিচ্ছে।
অন্যদিকে, দক্ষিণ কোরিয়াও নিজেদের অস্ত্র কর্মসূচির বিকাশে তৎপর। পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, প্রতিবেশী দেশ দুটির সামরিক তৎপরতা কোরীয় উপদ্বীপে অস্ত্র প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করছে, যা কোরীয় উপদ্বীপের শান্তি-স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি হিসেবে কাজ করছে।
সিউল সম্প্রতি সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রের প্রদর্শন করে। অন্যদিকে, উত্তর কোরিয়াও এক কুচকাওয়াজে সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য নতুন ধরনের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন করে।
চলতি সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়া তাদের ইতিহাসের সর্ববৃহৎ প্রতিরক্ষা প্রদর্শনী করছে। তারা শিগগির মহাকাশে নিজস্ব রকেট উৎক্ষেপণ করবে।
কোরীয় যুদ্ধের পরিণতিতে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া বিভক্ত হয়ে যায়। তিন বছরের যুদ্ধের পর ১৯৫৩ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়। কিন্তু সেটি শান্তিচুক্তি নয়। এ কারণে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া এখনো কৌশলগতভাবে যুদ্ধে রয়ে গেছে।
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন গত সপ্তাহে বলেছিলেন, তিনি কোরিয়ান উপদ্বীপে আবার যুদ্ধ শুরু করতে চান না।
তবে কিম জং-উন এ কথাও বলেন, শত্রুর বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার জন্য তার দেশের অস্ত্রের উন্নয়ন অব্যাহত রাখা জরুরি। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে শত্রুতার অভিযোগ আনেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বারবার বলে আসছেন, তারা উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসতে আগ্রহী। তবে তার আগে উত্তর কোরিয়াকে তার পারমাণবিক অস্ত্রের কর্মসূচি ত্যাগ করতে হবে। তারপরই কেবল নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হবে। কিন্তু উত্তর কোরিয়া এই দাবি মানতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।