ঢাকা: সারাদেশে তৃণমূল পর্যায়ে নির্বাচনকে ঘিরে যে উৎসবমুখরতা তা ধরে রাখতে সকলকে আরও সতর্ক থাকার আহবান জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ ভোটারের উপস্থিতিতে উৎসব মুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় দফা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কিছু প্রাণহানি ঘটেছে, অনেকে আহত হয়েছেন তা অত্যন্ত দুঃজনক। শুক্রবার (১২ নভেম্বর) বাসভবনে ব্রিফিংকালে এ আহ্বান জানান।
পরবর্তী ধাপের নির্বাচনে যাতে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়। সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের নির্বাচনের অনুকুল পরিবেশ ধরে রাখার জন্য নির্বাচন কমিশন ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাসমূহকে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান জানান।
তিনি বলেন, কোন দায়িত্বশীল ব্যক্তি, তিনি রাজনীতি কিংবা প্রশাসনের যেই-ই হোন দায়িত্বহীন বক্তব্য সমীচীন নয়। দেশের বিভিন্ন ইস্যুতে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, কিছু দায়িত্বশীল রাজনৈতিক নেতা এবং সরকারি কর্মকর্তা দায়িত্বহীন এবং কাণ্ডজ্ঞানহীন বক্তব্য রেখে চলেছেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, শুধু কোন কোন রাজনীতিবীদই নন,জনপ্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকর্তাদের কেউ কেউ সভা-সমিতি-সেমিনারে তাদের দায়িত্বের সীমারেখা অতিক্রম করে বক্তব্য রাখছেন, মন্তব্য করেছেন, যা মোটেই শোভনীয় নয়। রাজনীতিবীদ কিংবা সরকারি কর্মকর্তা সবারই একটি সুনির্দিষ্ট সীমারেখা আছ,আচরণ বিধি আছে, সকলের এ সীমারেখা মেনে চলা অতি আবশ্যক।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ বিষয়ে সকলকে বক্তব্য দেওয়া বা মন্তব্য করার ক্ষেত্রে নিজস্ব পরিমন্ডল বিবেচনা করা তথা সীমারেখা মেনে চলার আহবান জানান। তিনি বলেন, আমাদের কারো কারো অতি-উৎসাহি এবং বাড়তি কথা বা বক্তব্যে জনমনে ভূল মেসেজ যেতে পারে, যা দেশের জন্য মোটেই শুভ নয়।
শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে অন্ধ সমালোচনা করা বিএনপির এখন প্রতিদিনের রাজনৈতিক দায়িত্ব হয়ে দাঁড়িয়েছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, জনগণ ও দেশের জন্য তারা কিছু করতে না পারলেও মিথ্যাচার আর অপপ্রচারের কাজটি সুনিপুণ ভাবে করে যাচ্ছেন। চূড়ান্ত বিচারে এসব অপপ্রচার বিএনপির বিরুদ্ধেই যাবে এবং যাচ্ছে, যা তারা এখনো বুঝতে পারছেনা।
এসব সত্য বিএনপি যত তাড়াতাড়ি বুঝতে পারবে ততই তাদের জন্য মঙ্গল বলেও মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিব সেই পুরনো ভাঙা রেকর্ড বাজাচ্ছেন আর বলছেন বিচারব্যবস্থা নাকি দলীয়করণ করা হয়েছে, নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে। এসব অভিযোগ, সমালোচনার পুরনো হাতিয়ার এখন ভোঁতা হয়ে গেছে। এসব বিএনপির ধারাবাহিক কল্পিত অভিযোগের চর্বিত-চর্বন মাত্র।
দেশের বিচারবিভাগ স্বাধীনভাবেই কাজ করছে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, বিচারের রায় বিএনপির পক্ষে গেলে বলে বিচার বিভাগ স্বাধীন আর বিপক্ষে গেলে, বলে সরকারের হস্তক্ষেপের অভিযোগ তোলা তাদের পুরনো অভ্যাস। বিএনপির নীতি হচ্ছে, বিচার মানি কিন্তু তালগাছ আমার। বিএনপি নির্বাচনে জয়ী হলে বলে আরো বেশি ভোটে জয়ী হতে পারতো। আর হারলে বলে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ নয়। বিএনপির কাছে নিরপেক্ষ কমিশন মানে হচ্ছে নির্বাচনে জয়লাভের গ্যারান্টি প্রদান।