ঢাকা: দুর্গাপূজা, ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) ও লক্ষ্মীপূজা উপলক্ষে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এক সপ্তাহেরও বেশি সময় বন্ধ পেয়েছে। তাই এই সুযোগ কাজে লাগাতে সবাই ছুটছে গ্রামের পানে। এতে সকাল থেকেই রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে প্রচণ্ড ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। সবমিলিয়ে যাত্রী সমাগম, দোকানিদের ব্যস্ততা আর কুলিদের শোরগোলে দিনভর সরগরম ছিল সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল।
শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে রাজধানীর পুরান ঢাকার এই লঞ্চঘাটে ভিড়তেই দেখা মেলে সদরঘাটের ‘আসল’ রূপের। এ সময় লঞ্চ টার্মিনালের সামনে প্রচণ্ড ভিড় দেখা যায়। সেই সঙ্গে হাজারও রিকশা, ভ্যান ও সিএনজির উপস্থিতি চোখে পড়েছে। দেখে মনে হবে না যে দিন শুক্রবার, ছুটির দিন। রীতিমতো নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপারই মনে হবে।
দিন লঞ্চঘাটের সিঁড়িগুলো পার হয়ে ফেরিতে আসতেই দেখা যায়, জিনিসপত্র নিয়ে চলাচলকারী অসংখ্য মানুষ দাঁড়িয়ে আছে। সঙ্গে অপেক্ষার প্রহর গুনছে ফেরিওয়ালারাও। সবাই দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করছে- কে কোন লঞ্চে উঠবে। পাশাপাশি এদিক-সেদিক ঘুরে দর কষাকষিও চলছে।
পুরান ঢাকার এই লঞ্চঘাটে এ দিন দীর্ঘ বন্ধ পাওয়ায় অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ ছিল। এতে অনেকটাই যুদ্ধ করার মতো করেই লঞ্চ থেকে নামতে বা উঠতে দেখা গেছে অনেককেই। সবারই যেন চিন্তা একটাই- কে আগে নামবে, কখন পৌঁছাবে বাড়ি। সঙ্গে দোকানিদের ছোটাছুটিও ছিল চোখে পড়ার মতো। ডিম, মালাই, চানাচুর, বাচ্চাদের খেলনা নিয়ে নানা রকম ভঙ্গিতে এসব বিক্রি করতে দেখা যায় তাদের।
বাচ্চাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ দিয়েছে। সবাই আগে থেকে ঠিক করে রেখেছিলাম- পূজার ছুটিতে বাড়ি যাব। এবার পূজা বাড়িতেই পালন করব। বাড়ির সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে উৎসব পালন হবে। খুব আনন্দ লাগছে বাড়ি যেতে পেরে।
সঙ্গে আলাপকালে বরিশালগামী মিরণ দাস
চাঁদপুরগামী আবদুল আজিজ জানান, ঈদের পর এতবড় বন্ধ আর পাননি, তাই বাচ্চাদের মায়ের সঙ্গে বাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছেন। আর নিজে বাকি ক’দিন অফিস করে ছুটি নিয়ে বন্ধটা গ্রামের বাড়িতে গিয়ে উপভোগ করবেন।
ছুটির দিনে এমন ভিড় নিয়ে কথা হলে লঞ্চ টার্মিনালের কেরানি মোতাহার হোসেন বলেন, আজকে বন্ধের মাঝেও পুরো সময় ব্যস্ত সদরঘাট। শুক্রবার ছুটি থাকলেও এখানে কোনো ছুটি নেই। অন্যদিন শুক্রবার সকালে একটু চাপ কম থাকে, কারণ বৃহস্পতিবার রাতে সবাই বাড়ি যায়। কিন্তু পূজার বন্ধ থাকায় আজকেও প্রচুর চাপ ছিল।
যাত্রী পরিবহনের দিক দিয়ে দেশের সবচেয়ে বড় নদীবন্দর পুরান ঢাকার সদরঘাট থেকে মোট ৪৫টি রুটে নৌযান চলাচল করে। এই নদীবন্দর থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের এলাকা পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা, ঝালকাঠি, মাদারীপুর, চাঁদপুর, খুলনা, বাগেরহাটের মতো জেলায় লঞ্চ-স্টিমার চলাচল করে।