শিরোনাম :
কোনোভাবেই অগণতান্ত্রিক শক্তি ক্ষমতা দখল করতে পারবে না: প্রধানমন্ত্রী বিচার বিভাগ এখন গোপালগঞ্জ আ.লীগের কার্যালয়: রিজভী তুরস্কের গণমাধ্যমে খালেদা জিয়াকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ সরকার আইনের অপব্যাখা দিয়ে খালেদা জিয়াকে বন্দী রেখে হত্যা করতে চায় : ফখরুল ঢাকায় ৫.৩ মাত্রার ভূমিকম্প ডেঙ্গুতে আরও ১১ জনের মৃত্যু চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেলজয়ীদের নাম ঘোষণা খালেদা জিয়ার কিছু হলে বাংলাদেশে আগুন জ্বলবে: টুকু সূচকের সামান্য উত্থান, কমেছে লেনদেন এলপিজির নতুন দাম নির্ধারণ জিকো-মোরসালিনসহ পাঁচ ফুটবলার নিষিদ্ধ আমাদের গণতন্ত্র শিক্ষা দিবেন না, যুক্তরাষ্ট্রকে তথ্যমন্ত্রী ইরাকে কুর্দিদের স্থাপনায় তুরস্কের বোমা হামলা খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে বিএনপি রাজনীতি করতে চায় : হানিফ ‘আজকের শিশুদের নেতৃত্বেই পরিচালিত হবে স্মার্ট বাংলাদেশ’

টাকা লুট করে পালানোর পথে আরও ১২ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান

  • শুক্রবার, ১ অক্টোবর, ২০২১

ঢাকা: : ‘টর্নেডো, টাইফুন, কালবৈশাখী, তুফান’—এগুলো সব ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘দালাল প্লাস’ অফারের নাম। মোবাইল ফোন, ফ্ল্যাট, গাড়ি, ফ্রিজ থেকে শুরু করে কী বিক্রি করে না তারা।

যে কোনো পণ্যে ৪৫ শতাংশ ডিসকাউন্ট আর ৩০ দিনের মধ্যে ডেলিভারি। এমন অফারে শত শত মানুষের কাছ থেকে অন্তত ৫০০ কোটি টাকা নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

গত কয়েক দিন ধরে প্রতিষ্ঠানটির অফিস বন্ধ। মালিকদের কেউ আর ফোন ধরছে না। প্রতিদিনই তাদের প্রধান কার্যালয়ের সামনে গ্রাহকদের ভিড় বাড়ছে।

শুধু দালাল প্লাস না, এমন আরও ১১টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে নির্দিষ্ট সময়ে গ্রাহকের পণ্য সরবরাহ না করার। প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকদের খুঁজে পাচ্ছেন না গ্রাহকরা।

এই প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ইতিমধ্যে এদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। এর মধ্যে বেশ কয়েক জন দেশ ছেড়ে পালিয়েও গেছেন।

গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে পণ্য না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে যেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তাদের মধ্যে দালাল প্লাস ছাড়াও ‘কিউকম ডটকম’, ‘আলাদিনের প্রদীপ’, ‘বুমবুম’, ‘আদিয়ান মার্ট’, ‘নিডস’, ‘এসকে টেডার্স’, ‘মোটরস’, `চলন্তিকা’, ‘সুপন প্রডাক্ট’, ‘এসডিসি ওয়ার্ল্ড’ ও ‘নিউ নাভানা’।

এর আগে ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জ, সিরাজগঞ্জ শপ, ধামাকা শপিং ডটকম, নিরাপদ ডটকমসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের কাছ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা নিয়ে পণ্য দেয়নি। এসব প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারদের গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

এসপিসি ওয়ার্ল্ড ১৫০ কোটি টাকা, চলন্তিকা ৩১ কোটি টাকা, সুপম প্রডাক্টের ৫০ কোটি টাকা, নিউ নাভানার ৩০ কোটি টাকা এবং কিউকম ডটকমের ১৫ কোটি টাকা, আলাদিনের প্রদীপ ১০০ কোটি টাকা গ্রাহকের কাছ থেকে নিয়েছে।

এর বাইরে দালাল প্লাস নিয়েছে অন্তত ৫০০ কোটি টাকা। সবমিলিয়ে এই ১২ প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের কাছ থেকে দেড় হাজার কোটি টাকারও বেশি হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, আইনে কোনোভাবেই ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রণ করার সুযোগ পুলিশের নেই। কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আমাদের কাছে এলে তাদের বিষয়টি আমরা দেখতে পারি।

আসলে যিনি প্রতারিত হচ্ছেন, তিনি যদি লোভটা সংবরণ করতে পারেন তাহলে তিনি এটা থেকে বের হতে পারবেন।

মানুষের সর্বব্যাপী লোভটাই এদের কোম্পানি খুলে প্রতারিত করার জন্য প্রলুব্ধ করেছে। ব্যাংকে টাকা রাখলে সুদ পাওয়া যায় ৫ শতাংশ। আর এখানে আপনি ৩ লাখ টাকার পণ্য কিনছেন ১ লাখ টাকায়, রাতারাতি ২ লাখ টাকা লাভ করবেন? স্বপ্ন দেখছেন আপনি কোটিপতি হয়ে যাবেন? লোভ সংবরণ করতে না পারলে এই প্রতারণা চলতেই থাকবে। মানুষ সচেতন না হলে প্রতারিত হতেই থাকবে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে দালাল প্লাসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম রাব্বি আল-মামুনের সঙ্গে যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি। প্রতিষ্ঠাটিতে গেলেও কর্মচারীরা কোনো তথ্য দিচ্ছেন না।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেন, দালাল প্লাসের বিরুদ্ধে ২০টি অভিযোগ জমা পরেছে। সিআইডি যে প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে তার মধ্যে দালাল প্লাসও আছে।

সিআইডির এক জন কর্মকর্তা বলেন, আমরা কোম্পানির বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ পেয়েছি, কিছু সরকারি সংস্থার কাছ থেকে আরও কিছু তথ্য চাওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ দুই দিন আগে দালাল প্লাসের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে দেওয়া সম্প্রতি এক পোস্টে গ্রাহকদের কিছু চেক বাউন্স হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছে। সেখানে তারা আশ্বাস দিয়ে জানিয়েছে, গ্রাহকদের চিন্তার কিছু নেই, শিগগিরই তারা অর্থ বা পণ্য পাবে।

কিউকম ডটকম গত শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নোটিশ দিয়ে তাদের অফিস বন্ধের কথা জানিয়েছে। কিউকম বন্ধের নোটিশে বলা হয়, ‘আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কিউকমের সকল ফিজিক্যাল সাপোর্ট বন্ধ থাকবে এবং সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ হোম অফিসের মাধ্যমে সেবা প্রদান করবেন।

তাই সকল সম্মানিত গ্রাহকদের কিউকমের অফিসে না আসার অনুরোধ করা হচ্ছে।’

অফিস বন্ধের কারণ জানতে কিউকমের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন মিয়া এবং প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির নীরবের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।

তাদের ব্যবহার করা ফোনও বন্ধ পাওয়া গেছে।

 

সংবাটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খরব
© Copyright © 2017 - 2021 Times of Bangla, All Rights Reserved