লাইফস্টাইল ডেস্ক : একটা সম্পর্কের আসল পরীক্ষা হয় ঝড়ঝাপটার মুহূর্তে। নানাভাবে আসতে পারে চ্যালেঞ্জ। পরিবারের কারো অসুস্থতা, স্বামীর বিশ্বাসঘাতকতা, আর্থিক সংকটের মতো নানা সমস্যায় দেখা দিতে পারে যখন তখন। এরকম মুহূর্তে দাম্পত্যজীবনটা একেবারে শেষ করে দেওয়ার কথাও ভেবে নেন অনেকে।
কিন্তু এই সব চ্যালেঞ্জ যাঁরা অতিক্রম করে আসতে পারেন, তাঁদের সম্পর্কের বাঁধনের দৃঢ়তা যে পর্যায়ে যায়, তা দুর্বল হয়ে পড়াটা প্রায় অসম্ভবই বলা যেতে পারে৷ তারপরও নিজেদের সম্পর্কের উত্তাপ বাঁচিয়ে রাখতে পারেন আজীবন!
ইউনিভার্সিটি অ্যাট বাফেলো, স্টেট ইউনিভার্সিটি অফ নিউ ইয়র্ক এবং ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফর্নিয়ার গবেষকরা একটি সমীক্ষা চালিয়েছিলেন। যে সব দম্পতি জীবনে বড়ো কোনো দুর্যোগ কাটিয়ে এসেছেন, তাঁদের সম্পর্ক বেশি দৃঢ় হয় কিনা জানাই ছিল তাঁদের উদ্দেশ্য। গবেষকরা যা যা খুঁজে পেয়েছেন, দেখুন তো আপনার জীবনের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে কিনা!
সুন্দর মুহূর্তগুলো ধরে রাখুন
জীবনে ভালো সময় আর খারাপ সময় হাত ধরাধরি করে চলে। কিন্তু খারাপ মুহূর্তে জীবনের ভালো সময়টার কথা আর মনে থাকে না আমাদের। সম্পর্কের কঠিন পরীক্ষা এখানেই। আপনার স্বামীর যদি চাকরি চলে গিয়ে থাকে বা অন্য কোনও কারণে তিনি যদি বিষাদাচ্ছন্ন হয়ে থাকেন, তা হলে তার জেরে জীবনের উজ্জ্বল দিনগুলোর কথা ভুলে যাবেন না। স্বামীর গুণগুলোর কথা মনে করুন, ওঁর পুরোনো আত্মবিশ্বাসের কথা মনে করুন। নিজেকে বলুন খারাপ পরিস্থিতিটা নিতান্তই সাময়িক। ধীরে ধীরে হারানো আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবেন আপনি, স্বামীকেও ফের আশাবাদী করে তুলতে পারবেন।
নিজেদের টিম হিসেবে ভাবুন
দাম্পত্যজীবনে বিভিন্ন সময়ে একাধিক সমস্যা আসতেই পারে। সেই সমস্যা কাটিয়ে ওঠার শর্টকাট হল নিজেদের একটা টিম হিসেবে ভাবা। এই সময়টায় নিজেকে আলাদা ব্যক্তি বলে ভাবা চলবে না। সংসারের সব কাজ নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিন, সব কথা পরস্পরের সঙ্গে শেয়ার করুন। অসুস্থ শ্বশুর-শাশুড়ির চিকিৎসা, স্বামীর চাকরির ক্ষেত্রে অসুবিধে, অসুস্থতা- সমস্যা যাই হোক না কেন, স্বামীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ভাগ করে নিন। তা হলে ওঁকে সত্যিই সাহায্য করতে পারবেন।
পরস্পরের প্রতি নির্ভরশীল থাকুন
স্বামীর জীবনে যেমন সমস্যা আসতে পারে, তেমনি আপনার ব্যক্তিগত জীবনে ঝড় ওঠাও স্বাভাবিক। পেশাগত কারণে, শারীরিক কারণে আপনার নিজের জীবনে যদি কোনও অসঙ্গতি দেখা দেয়, নিজের মধ্যেই তা গোপন করে না রেখে স্বামীকে জানান। তাঁর সঙ্গে খোলামেলা কথা বলুন। পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস রাখুন, নির্ভর করুন। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে একজন অপরজনকে সান্ত্বনা জোগান, ভরসা দিন। পারস্পরিক নির্ভরতা থাকলে প্রতিকূল পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন।
জীবনের প্রতি আস্থা রাখুন
সমাজ, জীবন, পারিপার্শ্বিকের প্রতি সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি ছাড়ুন। সব কিছু ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখতে শিখুন। সম্পর্কে যতই টালমাটাল পরিস্থিতি আসুক, ইতিবাচক থাকলে তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। যুক্তি দিয়ে বোঝার চেষ্টা করুন, সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া কোনও পরিস্থিতি অতিরিক্ত বিশ্লেষণ করবেন না।
স্বামী যদি কোনওদিন ভালো করে কথা না বলেন তার মানেই যে উনি আপনার ব্যাপারে আগ্রহ হারাচ্ছেন, তা মোটেই নয়! স্বামীর জায়গা থেকেও বিভিন্ন পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করুন। দু’জনে দু’জনের পাশে থাকলে বহু দুঃসময়ই পেরিয়ে যাওয়া সম্ভব।