ঢাকা : সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর সরানোর পরিকল্পনা থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তিনি বলেন, যার যতটুকু প্রাপ্য তাকে ততটুকু শ্রদ্ধা করতে হবে। বঙ্গবন্ধুকে সম্মান করবেন। জিয়াউর রহমান সেখানে আছে থাকতে দেন। জাতীয় সংসদ ভবন এলাকার লুই আইকানের নকশা, এটা কোরআনের বানি নয়। লুই আইকানের নকশায় মেট্রোরেল ছিল? এখন কি মেট্রোরেল উঠাই নিয়ে যাবেন? তমিজউদদীন সাহেবের কবর উঠাই নিয়ে যাবেন? তমিজউদদীন সাহেবের কোনো অবদান নাই? পাশে যে বাড়িঘর হচ্ছে তা কি লুই আইকানের নকশায় ছিল? অকারণে ধাপ্পাবাজি করবেন না।
মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় সাংবাদিকদের ভূমিকা নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফাউন্ডেশনের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ৭ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে জাতীয় প্রেস ক্লাব জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘ মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় সাংবাদিকদের ভূমিকা‘ শীর্ষক আলোচনা সভা ও প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী স্মরণিক‘র মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
সংগঠনের সহসভাপতি মফিজুর রহমান লিলুর সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেনের পরিচালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন গণস্বাস্থ্যে কেন্দ্রের ট্রাস্টি ও প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাখেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক শওকত মাহমুদ, প্রধান বক্তা বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি এম আবদুল্লাহ, মহাসচিব নূরুল আমিন রোকন,ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, সাংবাদিক নেতা বাছির জামাল, মুক্তিযোদ্ধের প্রজন্ম সভাপতি কালাম ফয়েজি,মিডিয়া জার্নালিস্ট ক্লাবের সভাপতি বাদল চৌধুরী, নার্গিস চৌধুরী প্রমূখ।
অনুষ্ঠান প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মোড়ক উন্মোচন ও কেক কাটা হয়।
তিনি বলেন, আমরা কবর নিয়েও রাজনীতির করার চেষ্টা করছি। পাগল হয়ে গেছি আমরা, উন্মাদ হয়ে গেছি। অর্বাচীনের মত বক্তব্য দিচ্ছে ক্ষমতাসীনরা। আজ ডিএনএ টেস্ট করতে হলে তো অনেকের ডিএনএ টেস্ট করতে হবে। জয়ের ডিএনএ টেস্ট করতে হবে। অকারণে এসব বিতর্কে যাওয়া উচিত না। এটা অন্যয়, বেকুবের কাজ হবে। আজ যদি কেউ বলে বঙ্গবন্ধু টুঙ্গিপাড়া আছেন কিনা? তার ডিএনএ টেস্ট,,,। এটা পাগমী ছাড়া আর কিছু না, অবান্তর৷
বাংলাদেশ গণতন্ত্রের লজ্জাজনক অবস্থা উল্লেখ করে তিনি বলেন, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হলে কথা বলতে দিতে হবে। এই কথা বলবে সাংবাদিকরা। সাংবাদিকদের হাত-পা ছেড়ে দিতে হবে। আমরা একটা মুক্ত স্বাধীন দেশ চাই। আমরা গণতান্ত্রিক দেশ চাই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্য বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে আপনার আয়ু শেষ হয়ে গেছে। এই দায়িত্ব শেখ রেহানার হাতে দিয়ে দেন। তোফায়েলকে দেন। মতিয়া চৌধুরীকে দেন। জাতীয় সরকার করেন। ডা. কামাল হোসেনকে ডাকেন, মাহামুদুর রহমান মান্নাকে ডাকেন। আপনি বিশ্বরাজনীতিতে অবদান রাখেন। রোহিঙ্গা সমস্যা আপনি এনেছেন।
এই সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব আপনার। এজন্য তুরস্কে যান, ইরানে যান, পাকিস্তানে যান। পাকিস্তানে যাওয়ার জন্য অনেকে সমালোচনা করবে। পাকিস্তানের বুকে দাঁড়িয়ে বলেন, তোমরা ৭১ সালে যে অন্যায় করেছ তার জন্য ক্ষমা চাও। পাবলিকলি আমাদের জনগণের কাছে ক্ষমা চাও। ক্ষমা চাওয়াও পর তোমাদেরকে আমরা ভাই হিসাবে মেনে নেব। ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত কিছু হবে না।
তারেক রহমানের উদ্দেশ্য বলেন, আপনি ওই দেশে থাকেন। জাইমাকে পাঠিয়ে দেন। খালেদা জিয়া এখানো জেলে আছেন। ওনার জামিন নাই। ফিরোজায় থাকার চেয়ে নাজিমুদ্দিন রোড়ের জেলে থাকা বেটার। তাকে দিয়েই বিএনপির ভবিষ্যৎ। রাস্তায় নামা ছাড়া আর কোনো উপায় নাই।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আজ ৩১ আগস্ট, দিনটি খুবই গুরত্বপূর্ণ দিন। পৃথিবীতে একটা অঘটন ঘটে গেছে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পুঁজিবাদী দেশ জনগণের কাছে পরাজয় হয়েছে। তারা লেজ গুটিয়ে আফগানিস্তান থেকে চলে গেছে। ঠিক ১৯৭৫ সালে যেভাবে ভিয়েতনাম থেকে পলিয়ে এসেছিলেন। আজ আফগানিস্তানের মুক্তিযোদ্ধা তালেবানদের কাছে তারা পরাজিত। তবে তালেবানদের অন্ধকূপে গেলে চলবে না। আধুনিক জগতে ফিরে আসতে হবে।