ঢাকা:জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০ মাস আগে। এর মধ্যে এখনো হয়নি পূর্ণাঙ্গ কমিটি। সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল- শিগগিরই ঘোষণা করা হবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি। তবে গত ২১শে আগস্ট আচমকা ভেঙে দেয়া হয় ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ যুবদলের কমিটি।
এর পরই ফের আলোচনায় যুবদল। বর্তমান কমিটি পূর্ণাঙ্গ হবে নাকি গঠন করা হবে নতুন কমিটি এ নিয়ে চলছে নানা জল্পনা। এ বিষয়ে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত বেশ কয়েকজন যুবদল নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা হয় । এরমধ্যে কেউ কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার পক্ষে।
কেন্দ্র থেকে তৃণমূল অনেক নেতাদেরই দাবি কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হোক। তারা জানান, এর আগে ছাত্রদল করা অনেকেই রয়েছেন যাদের কোনো পদ- পদবি নেই। দীর্ঘদিন যুবদলের ব্যানারে কাজ করলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় অনেকেই পরিচয় দিতে পারছেন না। পূর্ণাঙ্গ হলে অন্তত কোনো পরিচয় নিয়ে বের হতে পারবেন তারা।
আরেক পক্ষ বলছে, মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি ঘোষণা হলেই ভালো হবে। নতুন কমিটি হলে সংগঠনের স্থবিরতা কেটে যাবে এবং নেতাকর্মীরা চাঙ্গা হবেন। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, পূর্ণাঙ্গ কমিটি হলে বর্তমান নেতৃত্ব আরও দীর্ঘায়িত হবে।
এদিকে কেন্দ্রীয় কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার কথাই ভাবছে যুবদলের শীর্ষ নেতারা। তবে যুবদলের সাংগঠনিক অভিভাবক বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছ থেকে এখনো পরিষ্কার কোনো বার্তা দেয়া হয়নি বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু টাইমস অফ বাংলাকে বলেন, আমরা কেন্দ্রীয় কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার বিষয়ে কাজ করছি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নেতাকর্মীদের সক্রিয় করতে সারা দেশে কমিটিগুলো ঢেলে সাজানো হচ্ছে। করোনা শুরুর আগে কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাগ করে সারা দেশের বিভিন্ন ইউনিটে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তারা সংশ্লিষ্ট ইউনিটের নেতাকর্মীদের সমন্বয় করে কাজ করছেন। কোথাও নতুন কমিটি করা হচ্ছে আবার কোথাও কমিটির সদস্য সংখ্যা
বাড়ানো হচ্ছে। তবে কেন্দ্রীয় কমিটি পূর্ণাঙ্গ আর নতুন যাই হোক এতে ত্যাগীদেরই মূল্যায়ন করা হবে বলে জানা গেছে।
নতুন কমিটিতে জায়গা পেতে দৌড়ঝাঁপ: যুবদলের কেন্দ্রীয় নতুন কমিটি হবে এমন খবরে ইতিমধ্যে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন নেতারা। বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানসহ দলটির সিনিয়র নেতাদের দ্বারস্থ হচ্ছেন অনেকে।
নতুন কমিটিতে সুপার ফাইভের জন্য বেশ কয়েকজন আলোচনায় রয়েছেন। এ তালিকায় রয়েছেন যুবদলের বর্তমান কমিটির সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, নুরুল ইসলাম নয়ন, মামুন হাসান, এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, জাকির হোসেন সিদ্দিকী, আবদুল মোনেম মুন্না। এ ছাড়া ছাত্রদলের সাবেক দুই সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশীদ হাবিব ও আকরামুল হাসানের নামও আলোচনায় রয়েছে।
সর্বশেষ ২০১৭ সালের ৩রা জানুয়ারি সাইফুল আলম নীরবকে সভাপতি ও সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে সাধারণ সম্পাদক করে যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সুপার ফাইভ কমিটিতে সিনিয়র সহ-সভাপতি করা হয় মোরতাজুল করিম বাদরুকে, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক করা হয় সাবেক ছাত্রনেতা নুরুল ইসলাম নয়ন এবং সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয় মামুন হাসানকে।
২০১৯ সালের ৯ই অক্টোবর যুবদলের ৫ নেতার সঙ্গে স্কাইপে বৈঠক করেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সেই বৈঠকে তিনি ২০শে অক্টোবরের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে নির্দেশ দেন। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করতে পারেনি যুবদল।