ঢাকা: জনসমাগম কাকে বলে তা আগামীকাল থেকে বিএনপিকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জনসমাগম কাকে বলে তা আগামীকাল থেকে বিএনপিকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।’

বিএনপির তিনটা সমাবেশ দেখেই নাকি সরকারের কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে গেছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে সরকারের কাঁপাকাঁপির কি আছে? কোন কোন সমাবেশে দশ লাখের টার্গেট করেও এক লাখ হয়নি, আবার কোথাও পাঁচ লাখ টার্গেট করেও এক লাখেরও অর্ধেকও হয়নি। এটাই তো বিএনপির সমাবেশের চেহারা।’

বিএনপিকে চ্যালেঞ্জ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগরীতে ওয়ার্ড ও থানার সম্মেলনে কত হাজার লোক হয়েছে তা দেখুন, যা পত্র-পত্রিকা ও মিডিয়ায় প্রচারিত হয়েছে।’

‘খেলা হবে’ বলা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যারা ১৭ কোটি মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে চায় – তাদের বিরুদ্ধে খেলা হবে বলেছি। খেলা হবে হাওয়া ভবন, লুটপাট, অর্থপাচারের বিরুদ্ধে, খেলা হবে দুর্নীতি, বিদ্যুৎবিহীন খাম্বার বিরুদ্ধে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘খেলা সোয়া এক কোটি ভুয়া ভোটার সৃষ্টিকারি, ভোট চুরি আর জালিয়াতির বিরুদ্ধে। খেলা হবে দেশের উন্নয়ন বিরোধীদের বিরুদ্ধে এবং সাম্প্রদায়িক অপশক্তির লালন ও পালনকারীদের বিরুদ্ধে, খেলা হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যারা বিশ্বাস করে না তাদের বিরুদ্ধে।’

বিএনপির প্রতি প্রশ্ন ছুড়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির নেত্রীই তো একসময়ে বলেছিলেন পাগল আর শিশু ছাড়া কেউই নিরপেক্ষ নয়, তাহলে আপনারা কী পাগল ও শিশু দ্বারা পরিচালিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চান। ক্ষমতার মোহে অন্ধ বিএনপি নেতারা সেটাই চাইতে পারেন।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এদেশে সাংবিধানিকভাবে নির্বাচন কমিশন রয়েছে, যার অধীনে যথাসময়ে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সরকার শুধু নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা দিবে।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, একইভাবে বাংলাদেশেও নির্বাচন হবে।’

রিজার্ভের টাকা তো গিলে ফেলেছে ফখরুল সাহেবরা, এমনটা জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘রিজার্ভ কত রেখে গিয়েছিলেন মনে আছে? যখন ক্ষমতা ছেড়েছেন তখন যা রেখে গিয়েছিলেন, তা পাঁচ বিলিয়নেরও কম।’

বিএনপির আমলে রিজার্ভ শূণ্যই ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ৪৮ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত আমাদের রিজার্ভ উঠেছিল। কিন্তু বৈশ্বিক সংকটের কারণে আজ রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন থেকে ৩৬ বিলিয়নে এসে ঠেকেছে। এ সংকট শুধু বাংলাদেশের নয়, দুনিয়ার সব উন্নত দেশ হিমশিম অবস্থায় রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপির রিজার্ভের ভান্ডার ছিলো শূন্য, এখন তারা কোন মুখে রিজার্ভ নিয়ে কথা বলে?’

বর্তমানে যে রিজার্ভ রয়েছে তা দিয়ে আগামী ৫ থেকে ৬ মাস সরকার আমদানি করতে পারবে বলেও জানান ওবায়দুল কাদের।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পরিবহন ধর্মঘটের জন্য মালিক শ্রমিকদের প্রতি উপদেশ দেওয়া প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ২০১৩-১৪ সালে যখন শত-শত গাড়ি বিএনপি ভাঙচুর করেছিল, পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে গাড়ি ও পরিবহন শ্রমিকদের পুড়িয়ে মেরেছিল, পরিবহন শ্রমিকদের রিজিকের ওপর হাত দিয়েছিল এবং মালিক শ্রমিক পরিবারকে নিঃস্ব করেছিল তারা সেটা এখনো ভুলে যায়নি। ভুলে যায়নি বিএনপির সেই আগুন সন্ত্রাস ও জ্বালাও পোড়াও রাজনীতি।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পরিবহন মালিক শ্রমিক নির্দিষ্ট কোন দলের নন, এখানে সকল দলেরই লোক আছে।’

বিএনপি নেতাদের স্মরণ করে দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পরিবহন মালিক সংগঠনের সভাপতি আওয়ামী লীগের, সাধারণ সম্পাদক বাসদের, বিএনপির বড় নেতা নেতা শিমুল বিশ্বাসও বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট। তাকেই জিজ্ঞেস করুন কেন ধর্মঘট করেছে?’