ঢাকা: অচিরেই বিশ্ববিদ্যায় খুলছে। আপনাদেরও কিন্তু আঁটঘাঁট বেঁধে নামতে হবে। অনেক অপশক্তি মাঠে নামবে চ্যালেঞ্জ করবে, মন্তব্য করে ছাত্রলীগকে সতর্ক করলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, এখন তারা বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গে অস্থিতিশীলতার প্রস্তুতিও নিচ্ছে। শেখ হাসিনার সরকারকে হঠানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাই ছাত্রলীগকে ওয়েল ইকুপড হতে হবে।
শুক্রবার (২৭ আগস্ট) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ আয়োজিত এক স্মরণ সভায় তিনি এ কথা বলেন। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব স্মরণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
খালেদা জিয়ার বিভিন্ন জন্মদিন পালন প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৫ আগস্ট বেগম জিয়ার ৫ম জন্মদিন। ষষ্ঠ হয়েছে পরে। একজন মানুষের দুইটা জন্মদিন হতে পারে কিন্তু একটা মানুষের ছয়টা জন্মদিবস এটা দুনিয়ার ইতিহাসে বিরল ঘটনা। এ ধরনের মিথ্যার জন্য যদি নোবেল পুরষ্কার পেতেন, তাহলে বেগম জিয়া নিঃসন্দেহে পেতেন।
এটা যখন আমি বলি তখন মির্জা ফখরুল বলে, ওবায়দুল কাদের শিষ্ঠাচার বহির্ভূত বক্তব্য রেখেছে। আমি তো হাওয়া থেকে পাওয়া কথা বলিনি। আমি খালেদা জিয়ার জীবনী থেকে তথ্য নিয়ে বলেছি, জবাব দিন।
কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কথায় এখন গা জ্বালা শুরু হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক সত্যের উদ্ধৃতি দিয়েছেন। মির্জা ফখরুল, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় তাকে (জিয়া) সমাহিত করা পর্যন্ত জেনারেল জিয়ার একটা লাশের ছবি দেখাতে পারবেন? প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের কাউন্টার করতে গিয়ে আপনি আবোল-তাবোল বকলেন। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বক্তব্য দিলেন কিন্তু আপনি লাশের ছবি দেখাতে পারবেন কি না? আমি লাশের ছবি দেখতে চাই।
ফখরুলকে তিনি সত্যের কাছে, সত্যের মুখোমুখি হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, মিথ্যার বেসাতি করে বেশিদিন রাজনীতি চলবে না। অনেক মিথ্যার বেসাতি করেছেন। ইতিহাসের অনেক সত্যকে চাপা দিতে চেয়েছেন। কিন্তু যে সত্য দিবালোকের মতো স্পষ্ট তা চাপা দেয়ার কোনও ক্ষমতা কারো নেই। সত্য বেরিয়ে আসবেই। আর এখন বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী সত্যই বলে দিয়েছেন, সেটা তার পছন্দ হয়নি।
গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন সরকারকে পতনের হুমকির বিষয়ে বিএনপির উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন আবার গণঅভ্যুত্থান করবে। দেখতে দেখতে ১২ বছর চলে গেল, এক যুগ এই বছর না ওই বছর আন্দোলন হবে কোন বছর? এক যুগ তো চলে গেল আন্দোলন হবে কোন যুগে? এই হিসাব আর আন্দোলনের হাঁকডাক আষাঢ়ের তর্জন গর্জনেই সার।
বাংলাদেশে ষড়যন্ত্রের রাজনীতি এখনো চলমান। বাংলার আকাশে এখনো ষড়যন্ত্রের গন্ধ তাই তরুণদের সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনাদের সতর্ক হতে হবে। সামনের দিন আরো কঠিন চ্যালেঞ্জ আছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি দেশে ক্ষমতার মঞ্চে পরিবর্তনের পর এখানে যারা উল্লসিত তাদের উদ্দেশ্য কি, মতলব কি, সেটা বুঝতে হবে?
তাই সততা, কর্ম, সাহস, মেধা, পরিশ্রম, চরিত্র দিয়ে সাধারণ ছাত্রদের কাছে ছাত্রলীগকে আকর্ষণীয় করে তোলার আহ্বান জানান।
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিজেরা নিজেদের শত্রু তথা আপন ঘরে যার শত্রু তার শত্রুতা করার জন্য বাইরের ঘরের শত্রুর দরকার নেই বলেও পরামর্শ দেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ওবায়দুল কাদের। একইসঙ্গে করোনা মহামারি, বন্যা দুর্গত এলাকায় ছাত্রলীগের মানবিক সহায়তার কার্যক্রমের জন্যও প্রশংসা করেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনি সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টচার্য।