গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি রায়ান মাওরো বলেন, ‘মিশরের সিনাই উপদ্বীপে সিনাই পর্বতের যে অবস্থানের কথা বলা হয়, তার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কিন্তু বাইবেলের বর্ণনার সঙ্গে আরব উপদ্বীপে পাওয়া স্থানটির অবিশ্বাস্য মিল খুঁজে পাওয়া গেছে।’
ধর্মীয় গ্রন্থে বর্ণিত আছে, সিনাই পর্বতে অবস্থান করেই নবুয়ত লাভ করেছিলেন মুসা। এই পর্বতের চূড়ায় উঠেই ঈশ্বরের কাছ থেকে পেয়েছিলেন ১০টি আদেশ। বহুকাল ধরে মানুষ এটাই জেনে এসেছে যে বাইবেল, কোরআন আর তাওরাতে উল্লেখিত সেই সিনাই পর্বত মিশরের সিনাই উপদ্বীপের সেইন্ট ক্যাথেরিন শহরে অবস্থিত।
কিন্তু এবার নতুন তথ্য দিলেন একদল গবেষক। তারা দাবি করছেন, এতকাল যেখানে ভাবা হয়েছে সিনাই পর্বত আসলে সেই স্থান থেকে আরও বেশ কয়েক মাইল দূরে অবস্থিত। সেই হিসাবে সিনাই পর্বত মিশরে নয়, বরং সৌদি আরবের ভূখণ্ডেই অবস্থান করছে।
নিউ ইয়র্ক পোস্টের তথ্য মতে, গবেষণাটি পরিচালনা করেছে বাইবেলের প্রত্নতাত্ত্বিক সংগঠন ‘দ্য ডাউটিং থমাস রিসার্চ ফাউন্ডেশন’। এই সংগঠনের গবেষকদের দাবি, বাইবেলের ওল্ড টেস্টামেন্টে সিনাই পর্বতকে যেভাবে বর্ণনা করা হয়েছে- ধোঁয়া, আগুন ও বজ্রপাতের মধ্যে আবৃত সেই স্থানটিকে তারা চিহ্নিত করতে পেরেছেন।
সৌদি আরবের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় পার্বত্য সেই স্থানটিতেই বাইবেলে বর্ণিত মোজেস কিংবা কোরআনে বর্ণিত মুসা ইসরায়েল জাতির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। জাবাল মাখলা হিসেবে খ্যাত ইহুদি, খ্রিস্টান ও মুসলিমদের পবিত্রতম সেই স্থানটি সৌদি আরবের জাবাল আল-লজ পর্বতেরই একটি অংশ।
গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি রায়ান মাওরো বলেন, ‘মিশরের সিনাই উপদ্বীপে সিনাই পর্বতের যে অবস্থানের কথা বলা হয়, তার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কিন্তু বাইবেলের বর্ণনার সঙ্গে আরব উপদ্বীপে পাওয়া স্থানটির অবিশ্বাস্য মিল খুঁজে পাওয়া গেছে।’
সিনাই পর্বত সৌদি আরবে, দাবি গবেষকদের
সিনাই পর্বতে অবস্থান করেই নবুয়ত লাভ করেছিলেন মুসা
গবেষকরা দাবি করেছেন, তাদের খুঁজে পাওয়া জাবাল মাখলার চূড়াগুলো সূর্যের তাপ কিংবা আগুনে পুড়ে কালো হয়ে গেছে। আর নুয়েবা সৈকতের কাছেই এই স্থানটির অবস্থান, যেখানে বিজ্ঞানীরা পানির নিচে স্থলপথও খুঁজে পেয়েছেন।
মাওরোর ধারণা, মোজেস আর তার অনুসারীদের জন্য সমুদ্রের পানি ভাগ করে এই পথই তৈরি করে দিয়েছিলেন ঈশ্বর।
এ ছাড়া গবেষকরা এমন একটি স্থানও আবিষ্কার করেছেন যা পাহাড়ের পাদদেশে একটি বেদীর মতো। সিনাই পর্বতের পাদদেশে মোজেসের তৈরি এরূপ একটি বেদীর কথা ধর্মগ্রন্থে উল্লেখ আছে।