ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য নতুন করে আবেদন চাওয়া অমানবিক বলে মন্তব্য করেছেন দলটির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর আবেদন আগেই করা আছে। নতুন করে আবেদন চাওয়া অমানবিক।
রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে সুপ্রিমকোর্টে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। কায়সার কামাল বলেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে না দেওয়া আন্তর্জাতিক ও দেশের আইন অনুযায়ী মানবাধিকারের লঙ্ঘন।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের সাজা হয়। সেদিন থেকে কারাবন্দি হন তিনি। এরপর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার আরও সাত বছরের সাজা হয়।
করোনা মহামারীর শুরুর দিকে ২০২০ সালের মার্চে নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার দণ্ড ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হলে তিনি গুলশানের বাড়িতে ওঠেন। তখন থেকে প্রতি ছয় মাস পরপর তার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে। এজন্য বাসায় থেকে চিকিৎসা নেওয়া এবং বিদেশে না যাওয়ার শর্ত দেওয়া হয় তাকে। বাসার থাকার পর বেশ কয়েকবার অসুস্থ হন বিএনপি প্রধান। আবারও অসুস্থ হলে গত ৯ আগস্ট তাকে এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক পরিস্থিতি দিন-দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে বলে বিএনপি নেতারা জানান।
বিএনপির অভিযোগ, দেশে খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা সম্ভব না হলেও সরকার তাকে বিদেশে নিতে অনুমতি দিচ্ছে না।
এর মধ্যে গতকাল আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে হবে। আবেদন করার পর বিষয়টি দেখা হবে।
রোববার বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, চিকিৎসক ও মেডিকেল বোর্ড বলেছেন- খালেদা জিয়া যে সমস্যায় ভুগছেন তার চিকিৎসা দেশে সম্ভব নয়। অতএব খালেদা জিয়ার চিকিৎসা দেশের বাইরে করাতে হবে- এটি আবেদন করার ওপর নির্ভর করছে না। এটি এখন সময় ও জনগণের দাবি। তার জীবন রক্ষার জন্য সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা।
কায়সার কামাল বলেন, ১৯৯০ সালের ১৪ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে একটি ডিক্লিয়ারেশন আছে। সেখানে বলা আছে- যদি কোনো ব্যক্তি সাজাপ্রাপ্ত কিন্তু তার উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যেতে হয়, তখন সে দেশের সরকারের দায়িত্ব বিদেশে প্রেরণ করা। সেই ডিক্লিয়ারেশনের প্রেক্ষিতে রাশিয়ার বিরোধীদলীয় নেতা অ্যালেক্স নাভালিনকে জার্মানি পাঠানো হয়েছিল উন্নত চিকিৎসার জন্য।
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক আইনের পাশাপাশি বাংলাদেশ সংবিধানের ১৫ ও ৩২ অনুযায়ী- খালেদা জিয়া বিদেশে চিকিৎসায় যেতে পারবেন।