কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় চলমান এসএসসি পরীক্ষার ইংরেজি ১ম ও ২য় পত্রের প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে এবং গণমাধ্যম কর্মীদের নজরে আসলে নড়েচড়ে বসে স্থানীয় প্রশাসন। অনেক নাটকীয়তার পরে মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় তিনজনকে আটক করে পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন- উপজেলার নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব লুৎফর রহমান,একই বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক রাসেল আহমেদ এবং ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের সহকারী শিক্ষক জোবায়ের।
বিভিন্ন গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, ভূরুঙ্গামারী উপজেলার নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটে। ওই কেন্দ্রে উপজেলার পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিচ্ছে। আর নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিচ্ছে পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে। পরীক্ষা শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে তা কেন্দ্রের বাইরে পাঠানো হয়। পরে সেই প্রশ্নের হাতে লেখা কপি চুক্তি করা শিক্ষার্থীদের মাঝে বিলি করা হয়। এ ঘটনায় কেন্দ্র সচিবসহ পরীক্ষা পরিচালনায় থাকা একাধিক শিক্ষক জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছেন সংশ্লিষ্টরা।
একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে আগামী উচ্চতর গণিত এবং বিজ্ঞান বিভাগের ৬টি পরীক্ষার প্রশ্ন পাওয়া গেছে। তাই আগামীতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এসব পরীক্ষা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী সুমন বলেন,আমি এই কেন্দ্র থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছি। হল রুমে অনেক শিক্ষার্থী আলোচনা করে তারা প্রশ্নের উত্তরপত্র পেয়েছে ২০০-৫০০ টাকায়। আমাকেও নিতে বলেছে অনেকেই। এভাবে যদি পরীক্ষার প্রশ্ন আউট হয় তাহলে আমরা ভালো পরীক্ষা দিয়ে কি লাভ?
এ প্রসঙ্গে ইংরেজি প্রভাষক মাইদুল ইসলাম মুকুল বলেন,আমি এইচএসসি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়াই। সেখানকার এবং কলেজের অনেক শিক্ষার্থী আমার নিকট হাতে লেখা প্রশ্ন নিয়ে আসে সমাধানের জন্য। পরে তাদের কাছে জানতে পারি কুড়িগ্রাম, রংপুর, ভূরুঙ্গামারী থেকে তাদের বিভিন্ন বড় ভাইদের মাধ্যমে এগুলো পেয়েছে। বিষয়টি স্থানীয় প্রেসক্লাবসহ প্রশাসনকে অবহিত করি।
এদিকে এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রহমান বলেন, আমি দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি ভূরুঙ্গামারী থেকে কোনো প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি।
পরীক্ষা শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে হাতে লেখা উত্তরপত্রের সঙ্গে পরীক্ষার প্রশ্নের হুবহু মিল থাকার বিষয়ে তিনি বলেন,মিল-অমিল আছে কিনা আমার দেখার বিষয় না? এটা সরকারের অনেক বিভাগ আছে,পুলিশ আছে তাদের দায়িত্ব।
এ বিষয়ে ভূরুঙ্গামারী সহকারী পুলিশ সুপার মোরশেদুল হাসান বলেন, আটক তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলা হলে তদন্ত করে পুরো বিষয়টি উদঘাটন করা হবে।