ঢাকা : এটাই আমাদের শেষ লড়াই, এ লড়াইয়ে আমাদেরকে জিততেই হবে জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপির স্বার্থে নয়, তারেক রহমানের স্বার্থে নয়, খালেদা জিয়ার স্বার্থে নয়, এদেশের জনগণের স্বার্থে, এদেশ রক্ষার স্বার্থে এবং এই জাতিকে রক্ষা করা স্বার্থে আমাদেরকে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
বুধবার (২ নভেম্বর) দুপুরে বগুড়া জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, এই দুর্বার গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে এ ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারকে পরাজিত করতে হবে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা খুব পরিষ্কার করে বলেছি- এখানে কোনো নির্বাচন নির্বাচনী খেলা হবে না। এখনই পদত্যাগ করুন। সব জায়গা থেকে পদত্যাগ করতে হবে। পদত্যাগ করে সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন সেই নির্বাচন কমিশনের অধীনে জনগণের সরকার গঠিত হবে। আসুন আমরা সকালে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সেই আন্দোলনকে আরও বেগবান করি।
প্রধানমন্ত্রী সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কথা বলেছেন যেটা ভয়ংকর মারাত্মক। ‘বলেছেন- বিএনপির দশা হেফাজতের মতো হবে।’ তারমানে আপনি স্বীকার করে নিচ্ছেন হেফাজতের ওপর যে গুলি করা হয়েছিল, অসংখ্য আলেম-ওলামা শিশু-কিশোর শিক্ষার্থী নিহত হয়েছিল তার জন্য দায়ী আপনি। হুমকি প্রয়োগ করছেন আন্দোলনরত, গণতন্ত্রে সংগ্রামরত এই বিএনপি’র প্রতি?
মির্জা আলমগীর বলেন, পরিষ্কার করে বলতে চাই- আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে অধিকার আদায়ের যে সংগ্রাম করছি; আমাদের এই অধিকার আদায়ের সংগ্রামে ইতোমধ্যে পাঁচজন যুবক তরুণ প্রাণ দিয়েছে। ভোলা নূরে আলম, আব্দুর রহিম, নারায়ণগঞ্জের শাওন, মুন্সীগঞ্জের শাওন এবং যশোরের আব্দুল হালিম। ৬ শ অধিক নেতাকর্মী গুম হয়ে গেছে। হাজারো নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। ৩৫ লাখের বেশি নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।
আজকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের নেতা তারেক রহমানকে বিদেশের নির্বাচিত করে রাখা হয়েছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে। গতকাল আবার তারেক রহমান এবং তার সহধর্মিণী যিনি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়, তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে কখনো কি…টিকিয়ে রাখা যাবে?
বিভাগীয় সমাবেশে নেতাকর্মীদের উপস্থিতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আমাদের আন্দোলন শুরু হয়েছে যে সংগ্রাম শুরু হয়েছে সারাদেশের মানুষ যে আবার জেগে উঠছে, এ জাগরণকে সামনে নিয়ে যেতে হবে। জনগণের (সরকার) আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এদেরকে পরাজিত করতে হবে।
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ বুঝে গেছে তাদের পায়ের নিচে আর মাটি নেই। তারা বুঝে গেছে এ দেশের জনগণ আর তাদের সঙ্গে নেই। সেজন্য আজকে তারা ভিন্ন পথে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তারা সংঘাত সৃষ্টি করতে চায়। আমার যে সংবিধান সম্মত অধিকার আমরা সমাবেশ করতে পারব, মিছিল করতে পারব, আমি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যেতে পারবো সেটাকে রুদ্ধ করার জন্য যত রকমের হীন কৌশল রয়েছে সেগুলোকে তারা ব্যবহার করছে।
এ কে এম সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এ কে এম মাহবুবুর রহমান, হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু ও বিএনপিদলীয় সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ প্রমুখ।