ঢাকা : আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা ফিরে আসবে না বলে মন্তব্য করেছেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন,‘জনগণকে সঙ্গে নিয়ে একটা ধাক্কা দেয়া বাকি। সেই ধাক্কাটা দিতে আসুন সকলে সংগঠিত হই। এই সরকারকে হটিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা এই ছাড়া আর কোনো বিকল্প নাই’
সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে গতকাল অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপের সহিংসতার প্রসঙ্গে টেন এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই মন্তব্য করেন। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে বাংলাদেশ সাউথ এশিয়ান ইয়ুথ রিসার্চ সেন্টারের উদ্যোগে মানবাধিকার ইস্যু এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি’ শীর্ষক এই গোল টেবিল আলোচনা সভা হয়।
তিনি বলেন, ‘এদেশের জনগণকে সংগঠিত করে, বিএনপিসহ দেশের যারা দেশপ্রেমিক, গণতান্ত্রিক এবং জাতীয়তাবাদী সকল শক্তিকে আজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইস্পাত কঠিন ঐক্য সৃষ্টি করে এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আর গণআন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে।’
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ধবংস করে দিয়েছে। এটা পরিস্কার যে, এই সরকারের অধীনে গণতন্ত্র আসবে না। এরকম অবস্থা থাকলে জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারবে না। চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন শেষ হলো। এই নির্বাচনে কি পরিমাণ সন্ত্রাস হতে পারে, কি পরিমাণ মারামারি হতে পারে, কত মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে আপনারা দেখেছেন।
এ থেকে বের হয়ে আসতে সরকার পরিবর্তনের কোনো বিকল্প নাই উল্লেখ করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এই সরকার নিজের অপকর্মের ভারে পতনের মুখে। এখন জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দেশপ্রেমিক সকল শক্তির মধ্যে ইস্পাত কঠিন ঐক্য সৃষ্টি করে গণআন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে।
তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, সরকারে এতোদিন থাকার পরে নিজেরও একটা ভার আছে সেই ভারে আজকে পতনের মুখে, আন্তর্জাতিকভাবেও কিন্তু তারা যে চাপে আছে তাতেও পতনের মুখে। এখন আমাদের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে একটা ধাক্কা দেয়া বাকি। সেই ধাক্কাটা দিতে আসুন সকলে সংগঠিত হই। এই সরকারকে হটিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা এই ছাড়া আর কোনো বিকল্প নাই।
দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ও সরকারের দমনপীড়নের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশকে একটি নিকৃষ্ট স্বৈরশাসকের দেশ হিসেবে তারা চিহ্নিত করছে। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক, দুঃখজনক। মুক্তিযুদ্ধের যে আকাঙ্ক্ষা ছিলো একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, সাম্যের বাংলাদেশ-এটা আজ ভুলণ্ঠিত হয়ে গেছে। এই সরকার আমাদের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, অতীতেও তারা একই কাজ করেছিল।
যেখানে গণতন্ত্র থাকে না, সেখানে মানবাধিকারও থাকে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজকে আমেরিকার মতো দেশও বাংলাদেশে মানবাধিকার নাই বলে একটা রাষ্ট্রীয় সংস্থাকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে এবং আমাদের এই সংস্থার উচ্চতর কর্মকর্তাদেরকে নিষেধাজ্ঞার অধীনে এনেছে। এটা অত্যন্ত লজ্জার ব্যাপার। এর মাধ্যমে কী প্রমাণিত হয়?
অসুস্থ খালেদা জিয়ার ওপরে সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ করে এর কঠোর সমালোচনা করেন খন্দকার মোশাররফ।
সংগঠনের সভাপতি ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এই আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামুসজ্জামান দুদু, বিশেষ সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন ও সাবেক রাষ্ট্রদূত সাকিব আলী বক্তব্য রাখেন।