আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুদ্ধের প্রভাবে ২০২২ সালের মধ্যে ইউক্রেনের অর্থনীতি সংকুচিত হবে ৩৫ শতাংশ। অপরদিকে রাশিয়ার জিডিপি ৪ দশমিক ৫ শতাংশ সংকুচিত হবে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া। এই যুদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার ওপর নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
চলতি বছর ক্রেমলিনকে বড় ধরনের অর্থনৈতিক অবরোধ মোকাবিলা করতে হবে বলে এক পূর্বাভাসে বলা হয়েছিলো। তবে বিশ্বব্যাংকের মতে, রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের ফলাফল ততটা মারাত্মক হয়নি।
যুদ্ধের মধ্যেও ইউক্রেনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সুবিধাজনক অবস্থানে আছে। যদিও বিশ্বব্যাংক মনে করছে, পুনরুদ্ধারের গতি শ্লথ হবে এবং যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হবে। এর জন্য ব্যয় হবে কমপক্ষে ৩৪ হাজার ৯০০ কোটি ডলার, যা দেশটির যুদ্ধপূর্ব মোট দেশজ উৎপাদনের দেড় গুণের বেশি।
বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যের দর বৃদ্ধি রাশিয়াকে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলায় সাহায্য করেছে। শক্তিশালী আর্থিক নীতি, মূলধন নিয়ন্ত্রণ, আর্থিক কড়াকড়ি, আর্থিক খাতের ঝুঁকি প্রতিরোধের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ এবং একই সঙ্গে বৈশ্বিক পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বদৌলতে নিষেধাজ্ঞার প্রভাব মোকাবিলায় সক্ষম হয় রাশিয়া।
যুদ্ধ শুরুর আগে থেকেই ইউরোপের সবচেয়ে দরিদ্র রাষ্ট্র ছিল ইউক্রেন। সাত মাসের বেশি সময় ধরে চলা চলমান যুদ্ধে দেশটির মোট ৪ কোটি ৪০ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে প্রায় এক-তৃতীয়াংশকে বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং ৬০ শতাংশ মানুষ জাতীয় দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে।
ইউরোপ ও মধ্য এশিয়া অঞ্চলভিত্তিক বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট আনা বেজার্ড বলেছেন, ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার আগ্রাসন বিপুলসংখ্যক মানুষের বাস্তুচ্যুতি ঘটানোর পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও মানবিক জীবনকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। অকারণ ও যুক্তিহীন এক যুদ্ধ চলছে, এ অবস্থায় ইউক্রেনের বিপুল আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দেশটির উৎপাদনক্ষমতা হ্রাস হওয়া, আবাদি জমির ক্ষতি ও শ্রম সরবরাহ হ্রাসের কারণে অর্থনীতিতে আঘাতের পাশাপাশি যুদ্ধের অন্যান্য প্রভাবও অব্যাহত থাকবে। এ ছাড়া শরণার্থীদের ফিরে না আসার ঝুঁকিগুলো বাড়ছে, যুদ্ধ এখন অষ্টম মাসে গড়িয়েছে। ফলে যারা যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়েছে, তারা এরই মধ্যে অন্যত্র বসতি স্থাপন করেছে।