অনলাইন ডেস্ক: ইভ্যালি ও ইঅরেঞ্জের মতো প্রতারণা করছে এমন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) একেএম হাফিজ আক্তার।
আজ শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ইভ্যালি ও ই-অরেঞ্জসহ এমন আরও প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা প্রতারণা করেছে। বাজারমূল্যের চেয়ে অনেক কম মূল্যে পণ্য বিক্রির অফার দিয়ে যারা গ্রাহকদের পণ্য দেয় না। তারা মূলত প্রতারণা করছে। এসব বিষয়ে তদন্ত চলছে, তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও কাজ করছে।
একেএম হাফিজ আক্তার বলেন, এ ধরনের প্রতারকদের বেশি বেশি ধরা হলে ধীরে ধীরে প্রতারণা কমে আসবে। আমরা চাই সুন্দর একটি ই-কমার্স প্লাটফর্ম ফিরে আসুক। দেশে ই-কমার্স প্রসারিত হোক।
বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ইভ্যালির সিইও রাসেল ও তার স্ত্রী চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গুলশান থানায় একটি মামলা হয়। আরিফ বাকের নামে ইভ্যালির এক গ্রাহক মামলাটি দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর বিকেলেই রাসেলকে গ্রেফতার করে র্যাব। পরে তাদের র্যাব সদরদফতর নিয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
পরে সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, রাসেল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, ইভ্যালির গ্রাহক সংখ্যা ৪৪ লাখেরও বেশি। শিশুদের নানা পণ্যের ব্যবসা ছেড়ে সামান্য পুঁজি নিয়ে রাসেল ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করেন।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইভ্যালির দায় ছিল ৪০৩ কোটি টাকা, যেখানে তাদের সম্পদ ছিল ৬৫ কোটি টাকা। বিভিন্ন সংস্থার এসব প্রতিবেদনের বিষয়ে গ্রেফতার রাসেল র্যাবকে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম ইভ্যালির সিইও ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দেন।
এদিকে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের মালিকপক্ষ প্রতারণামূলকভাবে গ্রাহকদের এক হাজার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে তাহেরুল ইসলাম নামের এক গ্রাহক গুলশান থানায় এমন অভিযোগ জানিয়ে মামলা করেছেন।
মামলায় ই-অরেঞ্জের মূল মালিক সোনিয়া মেহজাবিন, তার স্বামী মাসুকুর রহমান, মালিক বীথি আকতার, প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) আমানউল্লাহ চৌধুরী, প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা কাওসার আহমেদসহ প্রতিষ্ঠানটির সব মালিককে আসামি করা হয়।
ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন ও তার স্বামী মাসুকুর রহমানসহ তিনজন এখন কারাগারে। এজাহারভুক্ত বীথি আক্তারসহ দুজন পালিয়ে গেছেন। গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ই-অরেঞ্জের সঙ্গে সম্পৃক্ত বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানাকে ভারত-নেপাল সীমান্ত এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে।