ঢাকা: ‘রিজার্ভের টাকা কেউ চিবিয়ে খায়নি’— প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই বক্তব্যের জবাবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, রিজার্ভের টাকা চিবিয়ে খাননি, গিলে ফেলেছেন। গোটা বাংলাদেশের সমস্ত অর্থনীতিকে আপনারা গিলে ফেলেছেন।
শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর সেগুনবাগিচা ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, অবিলম্বে অবৈধ সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আজ সময়ের দাবি’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে যেটাতাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে আওয়ামী লীগের হাত থেকে যদি বাংলাদেশকে সরানো না যায় তাহলে বাংলাদেশের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। তারা বাংলাদেশের সমস্ত অর্থনীতিকে নিঃশেষ করে দিয়েছে।’
ফখরুল বলেন, ‘আমরা পরিষ্কার করে জানতে চাই, পায়রা বন্দরের জন্য টাকা কীভাবে গেল, কোথা থেকে গেল? আমরা জানি যেসব মালামাল আমদানি করা হয় তার পেমেন্ট করা হয় রিজার্ভ থেকে। আমরা যে ঋণ নিই তা পরিশোধ করতে হয় রিজার্ভের টাকায়। কিন্তু তিনি (শেখ হাসিনা) যে জোর দিয়ে বললেন, পায়রা বন্দরে খরচ করা হয়েছে, আমরা জানতে চাই কীভাবে খরচ হলো। কারা করল, কাদের দিয়ে করালেন। রিজার্ভের টাকা কীভাবে গেল?’
‘জাতীয় নির্বাচন পরে, এর আগে আমরা এদেরকে বিদায় করতে চাই’ এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। আমাদের পরিষ্কার কথা বলেছি, সংসদ ভেঙে দিতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে তাদের মাধ্যমে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। সেই নির্বাচন কমিশনের অধীনে জনগণ তাদের ভোট প্রয়োগ করে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবে।’
আওয়ামী লীগ সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত না পদত্যাগ করছে, যতক্ষণ পর্যন্ত না সংসদ বিলুপ্ত করছে, যতক্ষণ পর্যন্ত না তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত এই দেশের মানুষ বসে থাকবে না। তারা লড়াই করবে, সংগ্রাম করবে, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে একটি গণঅভ্যুত্থানের সৃষ্টি করে এদেরকে পরাজিত করা হবে।’
তরুণদের উদ্দেশ্য করে ফখরুল বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধারা দেশের স্বাধীনতা অর্জন করে দিয়েছে, এখন আপনাদের দায়িত্ব হচ্ছে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে, সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই ভয়াবহ দানব থেকে দেশকে মুক্ত করবেন। দেশে আবারও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবেন এবং মানুষের অধিকারগুলো ফিরিয়ে নিয়ে আসবেন। আসুন, আমরা গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমাদের অধিকার ফিরিয়ে আনি।’
এ সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবদীন ফারুক, ফজলুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরীন সুলতানা, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান প্রমুখ বক্তব্য দেন।