ঢাকা: সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২২-২৩ সেশনের নির্বাচনে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা। সেই সঙ্গে আবারও নির্বাচন দাবি ছাড়াও আইনজীবী ও সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন তারা।
বুধবার (২৯ মার্চ) জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন এই ঘোষণা দেন।
ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, আমাদের সুপ্রিম কোর্টে বারের ৭৩ বছরের ইতিহাসে এরকম কলঙ্কজনক ঘটনা আর ঘটেনি। এবারের নির্বাচন কমিশনের প্রধান মুনসুরুল হকের পদত্যাগের পর নতুন করে কমিশন গঠন না করেই ভোট করা হয়েছে। এই ভোটে একজন আগন্তুক মনিরুজ্জামানকে কমিশন করে করা হয়েছে। আমরা সুপ্রিম কোর্ট বারের ভোট পুনরায় দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি আমাদের সহকর্মী আইনজীবী ও সাংবাদিক বন্ধুদের ওপর হামলার ঘটনায় বিচার দাবি করছি। এ বিষয়ে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
এ দিন সুপ্রিম সুপ্রিম বার নির্বাচনকে কেন্দ্র আইনজীবী ও সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় তদন্ত চেয়ে করা রিট নিষ্পত্তি করা হয়। আদালত এই রিট নিষ্পত্তি করে অবজারভেশনে বলেছেন, অনুমতি ছাড়া সুপ্রিম কোর্টের ভেতরে পুলিশের প্রবেশ করা অনাকাঙ্ক্ষিত, অপ্রত্যাশিত।
গত সোমবার (২০ মার্চ) রিটের বিষয়টি জানিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। তার আগের দিন রোববার (১৯ মার্চ) বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের ১৪ জন প্রার্থীর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ওই রিটটি করেন তিনি।
সে সময় রিটের বিষয়ে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য (নীল) প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন জানিয়েছিলেন, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে তিনিসহ সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী এই রিট আবেদন শুনানির জন্য উপস্থাপন করেন। রিট আবেদনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন সচিব, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি), ঢাকার পুলিশ কমিশনার, ডিবি প্রধান ও শাহবাগ থানার ওসিকে বিবাদী করা হয়েছে।
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন আরও জানিয়েছিলেন, সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে পুলিশের ‘বেআইনি’ কর্মকাণ্ডের জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে রিট আবেদন করেছি। রিটে দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনাসহ রুল জারির আর্জি জানিয়েছি।
উল্লেখ্য, গত ১৫ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ভোটগ্রহণের প্রথম দিনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোল ছাড়াও মারামারি হয়। ওইদিন পুলিশের লাঠিচার্জ ও মারধরের শিকার হন অন্তত ২৫ জন সাংবাদিক ও আইনজীবী। সবমিলিয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীদের মধ্যে হাতাহাতি, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, হট্টগোল ও ধস্তাধস্তির মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দুই দিনব্যাপী নির্বাচন শেষ হয়।
সবশেষ গত ১৬ মার্চ দিবাগত রাতে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এতে ১৪টি পদের সবকটিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেল জয়ী হয়। তবে শুরু থেকেই নির্বাচনে ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল বিএনপি সমর্থকরা।