লাইফস্টাইল ডেস্ক: সপ্তাহের পাঁচ/ছয় দিন কর্মব্যস্ত থাকার পর এক/দুই দিন ছুটি। ফলে অনেকেই ছুটির দিনে কোথাও না গিয়ে বাড়িতে অলস সময় কাটান। ছুটির দিনের ৯-১০ ঘণ্টা হয়তো ঘুমিয়েই কাটিয়ে দেন তারা। কিন্তু এতো ঘুম কী শরীরের জন্য ভালো? দিনে কতো ঘণ্টা ঘুমানো জরুরি?
বিশেষজ্ঞদের মতে, দিনে ৬ ঘণ্টা ঘুমই যথেষ্ট। এর চেয়ে আধ ঘণ্টা এগিক-ওদিক হতে পারে। তবে দিনে যারা ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমিয়ে কাটান তাদের বিপদের আশঙ্কা বেশি। ভাল এবং পরিপূর্ণ ঘুম সকলের প্রয়োজন। কিন্তু অত্যধিক ঘুমেরও বেশ কিছু অসুবিধা রয়েছে। ডায়েবেটিস থেকে বন্ধ্যাত্ব পর্যন্ত হতে পারে।
তারা জানান, মাত্রাতিরিক্ত ঘুম মোটেই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। উল্টে মারাত্মক ক্ষতিকর। এর ফলে ডায়বেটিস, এমনকি হার্টের নানা রোগের আশঙ্কা বহুগুণ বেড়ে যায়। সম্প্রতি কয়েকটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, অতিরিক্ত ঘুম ধূমপান বা মদ্যপানের মতোই ক্ষতিকর।
সেরোটোনিন হরমোনের সাহায্যে ঘুম নিয়ন্ত্রিত হয়। অতিরিক্ত ঘুম সেরোটোনিনের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, নিউরোট্রান্সমিটারকেও বাধা দেয়, সেই কারণেই সকালে দেরিতে ঘুম থেকে ওঠার পরে মাথাব্যথার অভিযোগ করে অনেকে। এ ছাড়া, দীর্ঘ সময় ঘুমানোর পর হঠাৎ ক্ষুধা এবং তীব্র তৃষ্ণা বোধ হয়, যার কারণে মাথাব্যথা শুরু হয়।
অনেকক্ষণ ঘুমানোর অভ্যাস থাকলে, আপনার পিঠ প্রায়ই ব্যথা করবে। দীর্ঘ সময় ধরে ঘুমানোর ফলে পেশীগুলির উপর চাপ সৃষ্টি করে। এ ছাড়া খারাপ পজিশনে ঘুমানোর ফলেও পিঠে ব্যথা হয়।
অতিরিক্ত ঘুম ডিপ্রেশনের কারণ হতে পারে। স্লিপিং সাইকেল ঘেঁটে গেলে উৎকণ্ঠা এবং মানসিক চাপের অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে।
বেশি ঘুমানোর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে হতে পারে ক্লান্তি। অত্যধিক ঘুম বডি ক্লক ব্যাহত করে। অতিরিক্ত বিশ্রামের কারণে পেশী এবং স্নায়ু শক্ত হয়ে যায় ফলে, শারীরিক ধকল নিতে সমস্যা হয়।
অতিরিক্ত ঘুম হরমোনের উপরও প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণকারী হরমোনগুলো এর দ্বারা বেশি প্রভাবিত হয়। বেশি ক্লান্ত বোধ করার কারণে শরীরে খুব কম শক্তি থাকে, যার কারণে মানুষ সাধারণত জাঙ্ক ফুড বা উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া শুরু করে। এই সব কারণে, রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায় যার ফলে ডায়েবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
নারীদের ফার্টিলিটির উপর কুপ্রভাব বেশি ঘুমানোর প্রভাব নারীদের ফার্টিলিটির উপরও পড়ে। গবেষণায় প্রমাণিত, ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন থেরাপিতে থাকা নারীরা যারা সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমান তাদের গর্ভধারণের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। ৬ ঘণ্টা বা তার কম ঘুমোন তারা ৪৬% এবং যারা নয় থেকে এগারো ঘণ্টা ঘুমোন তাদের মধ্যে ফার্টিলির সন্তান ধারণের সম্ভাবনা থাকে ৪৩% শতাংশ।