শিরোনাম :
বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠানকে আইনি নোটিশ, চুক্তি বাতিল করল ওয়ালটন কেএনএফের আরও ৮ সদস্য আটক, অস্ত্র উদ্ধার ইরানের হামলা ঠেকাতে ইসরায়েলকে সহায়তা করা নিয়ে যা বলল সৌদি ইসরায়েলকে সহায়তা করায় জর্ডানে বিক্ষোভ খুলনায় ইসলামী ছাত্র আন্দোলন নেতার হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার তাপমাত্রা উঠল ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রিতে, প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ তাপপ্রবাহ নিয়ে যা জানালো আবহাওয়া অধিদপ্তর ড. ইউনূসকে ২৩ মে পর্যন্ত জামিন লিটার প্রতি ১০ টাকা বাড়ল সয়াবিন তেলের দাম উপজেলা নির্বাচন বর্জন করবে বিএনপি নেতানিয়াহু এ যুগের হিটলার: কাদের পণ্যের দাম ঠিক রাখতে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে : প্রতিমন্ত্রী আদালতে হাজির হয়ে ট্রাম্প বললেন, ‘এটি কেলেঙ্কারির বিচার’ ফরিদপুরে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ১২ ঘরে ঢুকে গৃহবধূকে শ্লীলতাহানী, অতঃপর…

২০ বছরে পশ্চিমা আগ্রাসনের বলি ৯ লাখ মুসলিম

  • বুধবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দুই দশকে ঘোষণা দিয়ে কমপক্ষে ৯৩ হাজার ৫২৭টি হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী। সবচেয়ে বেশি হামলা হয়েছিল ২০০৩ সালে। সে সময় ইরাকে সামরিক অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। ওই বছর ১৮ হাজার ৬৯৫টি বিমান ও ড্রোন হামলার কথা জানিয়েছিল আমেরিকার প্রশাসন।

২০০১ সাল থেকে বিভিন্ন দেশে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের বলি হয়েছে কমপক্ষে আট লাখ ৯৭ হাজার মানুষ। এসব অভিযানে সামগ্রিক আর্থিক ক্ষতি আট ট্রিলিয়ন ডলার।

যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন ইউনিভার্সিটির কস্ট অফ ওয়ার প্রজেক্টের তথ্য অনুযায়ী, মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে চালানো ড্রোন ও বিমান হামলায় তিন লাখ ৮৭ হাজার বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাজ্যভিত্তিক পর্যবেক্ষক সংস্থা এয়ারওয়ার্সের বিশ্লেষণ বলছে, ২০০১ সাল থেকে আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া, সোমালিয়া, লিবিয়া, ইয়েমেন আর পাকিস্তানে প্রায় এক লাখ বিমান ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে পেন্টাগন।

গত সপ্তাহে প্রকাশিত ব্রাউন ইউনিভার্সিটির গবেষণার ফলে উঠে এসেছে, সংঘাতে নানা দেশের সেনাবাহিনী আর পুলিশের আরও দুই লাখ সাত হাজার সদস্য এবং যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন জোট ও মিত্র দেশগুলোর হামলায় আরও তিন লাখ এক হাজার বিদ্রোহী যোদ্ধা নিহত হয়েছে।

যুদ্ধে প্রাণ গেছে যুক্তরাষ্ট্রেরই প্রায় ১৫ হাজার নিরাপত্তা সদস্য ও ঠিকাদার।

যুক্তরাষ্ট্রে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ারসহ কয়েকটি স্থানে একযোগে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা হয়। নাইন-ইলেভেন অ্যাটাক হিসেবে বিশ্বজুড়ে পরিচিত ওই হামলার পরই সন্ত্রাসীদের ঘাঁটিতে ধ্বংসের নামে মধ্যপ্রাচ্য আর উত্তর আফ্রিকায় আক্রমণ শুরু করে ওয়াশিংটন।

এয়ারওয়ার্স জানিয়েছে, শুধু যুক্তরাষ্ট্রের হামলাতেই ২২ হাজার ৬৭৯ জন বেসামরিক মানুষের নিহত হওয়ার নিশ্চিত হিসাব আছে তাদের হাতে। প্রকৃত সংখ্যা ৪৮ হাজারের কাছাকাছি হতে পারে।

এয়ারওয়ার্সের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে টার্কিশ রেডিও অ্যান্ড টেলিভিশনের সংবাদে বলা হয়, দুই দশকে ঘোষণা দিয়ে কমপক্ষে ৯৩ হাজার ৫২৭টি হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী।

সবচেয়ে বেশি হামলা হয়েছিল ২০০৩ সালে, যখন ইরাকে সামরিক অভিযান শুরু করে ওয়াশিংটন। ওই বছর ১৮ হাজার ৬৯৫টি বিমান ও ড্রোন হামলার কথা জানিয়েছিল আমেরিকান প্রশাসন।

এয়ারওয়ার্সের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার প্রত্যক্ষ হিসাবে ২২ হাজার ৬৭৯ বেসামরিক প্রাণহানির তথ্য নিশ্চিত করা গেছে। কিন্তু আমাদের অনেক তথ্যদাতাই হতাহতের ভিন্ন হিসাব দিয়েছেন, যার সবটা নিশ্চিত করা যায়নি। ফলে এ

দেশগুলোতে বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতির সামগ্রিক চিত্রের আংশিক দেখতে পাচ্ছি আমরা।’

তথাকথিত সন্ত্রাসবিরোধী এ যুদ্ধ পরিচিতি পেয়েছে ‘অনন্ত যুদ্ধ’ হিসেবে। দীর্ঘ এ যুদ্ধের পরিসর সুনির্দিষ্ট ছিল না। তিনটি বড় ভাগে হামলাগুলো চালানো হয়েছে।

এগুলো হলো ২০০১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানে এবং ২০০৩ থেকে ২০০৯ সালে ইরাকে পূর্ণ সামরিক হস্তক্ষেপ ও দখলদারিত্ব, ২০১৪ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ইরাক ও সিরিয়ায় আর ২০১৬ সালে লিবিয়ায় জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে বড় পরিসরে বিমান হামলা অভিযান; ২০০৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সোমালিয়ায়, ২০০২ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ইয়েমেনে, ২০০৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানে আর ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত লিবিয়ায় সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে ড্রোন ও বিমান হামলা।

দেশভিত্তিক সবচেয়ে প্রাণঘাতী বছর ছিল ২০০৩ সাল। সে বছর ইরাকে কমপক্ষে পাঁচ হাজার ৫২৯ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার তথ্য নথিভুক্ত হয়েছিল। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক প্রাণহানি হয়েছিল ২০১৭ সালে। ওই বছর মারা যান চার হাজার ৯৩১ জন।

বেশিরভাগ প্রাণহানি ঘটে ইরাক ও সিরিয়ায়। হামলায় ছিল যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন জোট।

সামগ্রিকভাবে সবচেয়ে প্রাণঘাতী বছর ২০১৭ সাল। মূলত আইএসবিরোধী অভিযানে বিভিন্ন দেশে ওই বছর ১৯ হাজার ৬২৩ জনের প্রাণহানির হিসাব মিলেছে।

বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতির ৯৭ শতাংশই আফগানিস্তান ও ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের দখলদারিত্ব আর ইরাক ও সিরিয়ায় আইএসবিরোধী অভিযানের ফল।

সংবাটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খরব
© Copyright © 2017 - 2021 Times of Bangla, All Rights Reserved