আন্তর্জাতিক ডেস্ক: নেপালের বিভিন্ন অংশে টানা কয়েক দিনের বর্ষণে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে মৃত্যু অন্তত ১০০ ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। অসময়ের বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট দুর্যোগে অন্তত ১০১ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে, এখনও নিখোঁজ ৪১ জন। বৃহস্পতিবার এমনটাই জানিয়েছে তারা।
নেপাল পুলিশের দেওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে কাঠমান্ডু পোস্ট জানিয়েছে, কেবল ১ নম্বর প্রদেশেই ৬০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে; সুদূর পশ্চিম প্রদেশে মারা গেছে আরো ৩১ জন। আহত ৪০ জনের মধ্যে ১৯ জনই ১ নম্বর প্রদেশের, কার্নেলিতে চার জন এবং সুদূর পশ্চিম প্রদেশে ১৭ জন আহত হয়েছে। নিখোঁজদের সন্ধানে অভিযান অব্যাহত আছে।
বন্যা ও ভূমিধসের কারণে ১ হাজার ১৭৭টি পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে পুলিশের তথ্যে জানানো হয়েছে। নেপাল পুলিশের মুখপাত্র সিনিয়র সুপারিনটেন্ডেন্ট অব পুলিশ বসন্ত বাহাদুর কুনওয়ার বলেছেন, ‘বাস্তুচ্যুত, বন্যাক্রান্ত ও ভূমিধসপ্রবণ এলাকার মানুষজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যেতে বিভিন্ন সংস্থা ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষগুলোর সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করছে নেপাল পুলিশ। দেশের বিভিন্ন অংশে পণ্য ও যাত্রী পরিবহন সচল রাখতে রাস্তা পরিষ্কারেও পুলিশ সদস্যরা কাজ করছেন।’
টানা বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় ফসলেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো। দেশটিতে পঞ্জিকার বর্ষাকাল শেষ হওয়ারও এক মাস পর অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে দেখা দেওয়া এই হঠাৎ ও তীব্র বর্ষণ বিশেষজ্ঞদের চোখ কপালে তুলে দিয়েছে।
জলবায়ুর পরিবর্তন নেপালের অর্থনীতি ও জীবনযাত্রায় যে ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে, এ বৃষ্টিকেই তার নজির হিসেবে দেখছেন তারা। গত কয়েক বছর ধরে নেপালে স্বল্প সময়ে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হতে দেখা যাচ্ছে, এটিই এখন ‘নিউ নরমাল’ হয়ে উঠছে বলেও বলছেন বিশেষজ্ঞরা। হিমালয়ের কোলে থাকা দরিদ্র এ দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাও খুব একটা ভালো নয়। উন্নয়নের নামে দেশটিতে দেদারসে গাছ ও পাহাড় কাটা চলছে, যা বর্ষাকালীন দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও বাড়াচ্ছে।