শিরোনাম :
রাখাইনে জান্তার আরেক ব্যাটালিয়ন দপ্তর আরাকান আর্মির দখলে বিএনপি নেতারা বহাল তবিয়তে ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন: কাদের মেহেদির রং শুকানোর আগে প্রাণ গেল তরুণের ঘরের কাজে ব্যস্ত মা, পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্যের ডাক বিশ্বে প্রতিদিন ১০০ কোটি টন খাবার নষ্ট হয় : জাতিসংঘ ভোট ডাকাত সরকারকে প্রকাশ্যে সমর্থনকারী দেশের পণ্য বর্জন ন্যায় সঙ্গত: রিজভী চার বছরে মাধ্যমিকে ১০ লাখ শিক্ষার্থী কমেছে ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে শুক্রবার আরও কমলো রিজার্ভ ঢাবির বিজ্ঞান ইউনিটে পাসের হার ৮.৮৯ শতাংশ গণতন্ত্রের আন্দোলন ন্যায়সঙ্গত, আন্দোলনে আমরা বিজয়ী হবো: ফখরুল একনেকে ১১ প্রকল্প অনুমোদন একদিন পর বাংলাদেশি যুবকের লাশ ফেরত দিল বিএসএফ ত্রিশালে বাসচাপায় অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত

আবার চালু হলো ২০টির বেশি বিদেশি চ্যানেল

  • বুধবার, ৬ অক্টোবর, ২০২১

ঢাকা : বাংলাদেশে ক্লিন-ফিড দেয় এমন ২০টিরও বেশি বিদেশি চ্যানেল আবারো চালু হয়েছে। পাঁচ দিন বন্ধ থাকার পর চ্যানেলগুলো চালু হওয়ার কথা জানিয়েছেন কেবল অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আনোয়ার পারভেজ।

তিনি বলেন, ক্লিন-ফিড পাওয়ার কারণে ১৫টি চ্যানেলের সম্প্রচার আবারো চালু করা হয়েছে। এছাড়া আরো যেসব চ্যানেলের ক্লিন-ফিড পাওয়া যাবে সেগুলোর বিষয়েও খোঁজ নেয়া হচ্ছে। পাওয়া গেলে সেগুলোও চালু করা হবে।

সম্প্রতি, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে ক্লিন-ফিড দেয় এমন চ্যানেলের সম্প্রচার অব্যাহত রাখার বিষয়ে দেয়া এক নির্দেশের পর এই পদক্ষেপ আসলো।

বিষয়টি স্বীকার করেছেন কোয়াব নেতারাও। তারা বলছেন, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ এবং ক্লিন-ফিড বা বিজ্ঞাপন বিহীন ফিড পাওয়ার কারণেই এসব চ্যানেল চালু করা হয়েছে।

যেসব চ্যানেল আবার দেখা যাচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে পশ্চিমা কয়েকটি চ্যানেল এবং কোরিয়া, জাপান ও চীনের বেশ কিছু চ্যানেল।

তবে ক্লিন-ফিড না পাওয়ার কারণে ঢাকাসহ পুরো দেশে ৪০-৫০টির মতো চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ আছে।

মি. পারভেজ বলেন, “ঢাকার বাইরের শহরগুলোতে ৬০টির মতো চ্যানেল চলতো। আর ঢাকাতে চলতো ৯০টি। এগুলোর মধ্যে সব মিলিয়ে এখন চালু আছে ৫০টির মতো।”

ক্লিন-ফিড না থাকা ছাড়া সম্প্রচার বন্ধ থাকার আর কোন কারণ নেই বলেও জানান তিনি।

যেসব চ্যানেল দেখা যাচ্ছে

বুধবার রাজধানী ঢাকা থেকে বিভিন্ন চ্যানেলগুলো খুঁজে দেখার সময় যে চ্যানেলগুলোর সম্প্রচার চোখে পড়েছে সেগুলো হচ্ছে, বিবিসি ওয়ার্ল্ড নিউজ, বিবিসি আর্থ, ডি-ডাব্লিউ, সিসিটিভি, ফ্রান্স ২৪, আল জাজিরা, ফিনিক্স ইনফো নিউজ, এবিসি অস্ট্রেলিয়া, সিএনএন ইন্টারন্যাশনাল, লোটাস ম্যাকাও, এইচবিও এইচডি, সিএনবিসি গল্ফ, লাইভ স্পোর্ট, এএক্সএন এইচডি, ওয়ার্নার টিভি, এনএইচকে-ওয়ার্ল্ড জাপান, চ্যানেল নিউজ এশিয়া, এনিম্যাক্স এইচডি, সৌদি কুরান, সৌদি সুন্নাহ, কেবিএস কোরিয়া, রাশিয়া টুডে, আরিরাং, সিজিটিভি এবং ট্রাভেলএক্সপি। এসব চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচারিত হতে দেখা যায়নি।

বাংলাদেশে বিদেশি টিভি চ্যানেল সম্প্রচার সংক্রান্ত একটি পুরনো আইন বাস্তবায়ন করতে গিয়ে গত পহেলা অক্টোবর থেকে দেশে সব রকম বিদেশি টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়া হয়।

আইনটিতে বলা আছে, যেসব বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দেখানো হয়, সেসব চ্যানেল বাংলাদেশে প্রদর্শন করা যাবে না, এই নিয়ম কার্যকর করতে গিয়ে শুক্রবার বিবিসি-সিএনএনসহ সব আন্তর্জাতিক খবরের চ্যানেল, খেলার চ্যানেল এবং ভারতীয় বিনোদন চ্যানেল গুলোসহ সব বিদেশি চ্যানেলগুলো বন্ধ করে দেয় কেবল অপারেটররা, যা এখন পর্যন্ত বন্ধই রয়েছে।

জানেন না অনেক দর্শক

রাজধানীর ঢাকার বাসিন্দা আমিরুল ইসলাম। তিনি জানান, গত দু-একদিনের মধ্যে দেশি চ্যানেলগুলো ছাড়া বিদেশি কোন চ্যানেল চোখে পড়েনি তার।

তবে তিনি বলেন, টেলিভিশন দেখার মধ্যে খবরের চ্যানেলগুলোই বেশি দেখা হয়। দেশি খবরের চ্যানেলগুলোর সাথে বিদেশি বা আন্তর্জাতিক সংবাদ চ্যানেলগুলো চালু করা গেলে ভাল হয় বলেই মনে করেন মি. ইসলাম।

ভারতীয় চ্যানেলগুলোর বিষয়ে মি. ইসলাম বলেন, দূরদর্শন ছাড়া বাকি চ্যানেলগুলো বন্ধ করে দেয়া উচিত। তার মতে ভারতীয় বেশিরভাগ চ্যানেলে প্রচারিত অনুষ্ঠান বাংলাদেশের সংস্কৃতির সাথে মেলে না।

তার ভাষায়, “সারাদিন এগুলোতে বউ-শাশুড়ির ঝগড়া দেখায়। আমাদের দেশের নারীরা এতো খারাপ না যে, সারাক্ষণ দেবর, জা কিংবা শাশুড়ির পেছনে লেগে থাকবে। শতকরা দু’জনও এমন পাওয়া যাবে না।”

খিলগাঁও এলাকার বাসিন্দা উম্মে জোহরা জুঁই। তিনি বলেন, বিদেশি কোন চ্যানেল দেখেননি তিনি। তবে ১লা ক্টোবর সম্প্রচার বন্ধ হওয়ার কোন বিদেশি চ্যানেল আবার দেখা যাচ্ছে কিনা সেটি অবশ্য তিনি খুঁজেও দেখেননি বলে জানান।

মিজ জুঁই বলেন, তার দুই সন্তান রয়েছে যারা বিদেশি কার্টুন চ্যানেলগুলো মিস করছে। তবে অভিভাবক হিসেবে তিনি চান না যে, সেগুলো আবার চালু হোক।

কঠোর অবস্থানে সরকার

বাংলাদেশে ক্লিন-ফিড ছাড়া বিদেশি টেলিভিশন চ্যানেলগুলো আবারো চালুর বিষয়ে কঠোর অবস্থানের থাকার বিষয়ে স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছে সরকার।

রাজধানী ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বিদেশি চ্যানেল চালুর বিষয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, বিদেশি চ্যানেলগুলো ক্লিন-ফিড দিলে তবেই কেবল অপারেটররা সেগুলো আবার চালাতে পারবে।

তিনি জানান, এ বিষয়ে নতুন কোর আর কোন সময়সীমা বেঁধে দেয়া হবে না।

সাংবাদিকদের জবাবে মন্ত্রী বলেন, “আমাদের ডেট ১লা অক্টোবর। যারা ক্লিন-ফিডসহ চালু করতে পারবে তারা চালাতে পারবে, যারা পারবে না, তারা পারবে না।আর নতুন ডেড লাইনের কোন দরকার নেই।”

এদিকে, ক্লিন-ফিড দেয়া টিভি চ্যানেলগুলো চালুর বিষয়ে ৪ঠা অক্টোবর বাংলাদেশ তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশ করা হয়।

এতে ক্লিন-ফিড দেয় এমন বেশ কয়েকটি বিদেশি চ্যানেল বন্ধ না রেখে সম্প্রচার অব্যাহত রাখার নির্দেশ দেয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোনো কোনো বিদেশি টিভি চ্যানেল ক্লিন-ফিড দেয়া সত্ত্বেও পহেলা অক্টোবর থেকে সম্প্রচার বন্ধ রাখা হয়। এ ধরণের কর্মকাণ্ড কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন ২০০৬ এর পরিপন্থী।

বিজ্ঞপ্তিতে যেসব টিভি চ্যানেলের নাম উল্লেখ করা হয় সেগুলো হচ্ছে, কইঝ ডড়ৎষফ, অজওজধহম ঞা, ইইঈ, ঈঘঘ, অষ লধুববৎধ ঐফ, উড, ঘঐক ডড়ৎষফ, ঈএঞঘ, জঁংংরধ ঞড়ফধু, ঋৎধহপব ২৪, খড়ঃঁং, ঞৎধাবষ ঢচ ঐউ, অষ ছঁৎধহ, অষ ঝঁহহধ, ঞৎধাবষ ঢচ, দূরদর্শন। এসব টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার অব্যাহত রাখার নির্দেশ দেয়া হয়।

আন্দোলন হবে কি?

পহেলা অক্টোবর থেকে ক্লিন-ফিড না থাকায় বিদেশি চ্যানেলগুলোর সম্প্রচার সাময়িক বন্ধ রাখার নির্দেশনা কার্যকর হওয়ার পর এ নিয়ে উত্তেজনা ছিল দর্শক ও কেবল অপারেটর সংস্থাগুলোর মধ্যে।

দোসরা অক্টোবর শনিবার কেবল অপারেটরস সমন্বয় কমিটি নামে কোয়াবের একটা অংশ চার দফা দাবি জানিয়ে একটা প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেয়। সেখানে বলা হয় যে, চৌঠা অক্টোবরের মধ্যে কেবল টিভি নিয়ে জটিলতার অবসান না হলে সমগ্র বাংলাদেশের ক্যাবল অপারেটরদের নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনে যাবেন তারা।

এ বিষয়ে কোয়াবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আনোয়ার পারভেজ বলেন, পুরো কোয়াব নয় বরং কোয়াবের একটি অংশ আন্দোলনের কথা বলেছিল।

তবে এই মুহূর্তে আন্দোলনের যাওয়ার বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।

মি. পারভেজ বলেন, “আন্দোলন কোন সমস্যার সমাধান নয়। আলোচনা করেই সমস্যার সমাধান করতে হবে।”

তিনি বলেন, কোন চ্যানেলের ক্লিন-ফিড পাওয়া যাবে কিনা সেটি নির্ভর করে ব্রডকাস্টার এবং স্থানীয় পরিবেশক বা ডিস্ট্রিবিউটরদের উপর। সেখানে কেবল অপারেটরদের কোন ভূমিকা নেই। তবে সব পক্ষের সাথে আলোচনা চলছে।

কেবল অপারেটররা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ কবে বলে জানান কোয়াবের এই নেতা।

সংবাটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খরব
© Copyright © 2017 - 2021 Times of Bangla, All Rights Reserved